থানায় মৃত্যু পুলিশ বলছে বিষপান বাবার প্রশ্ন পেল কোথায়!!
|
সময় নিউজ বিডিঃ পটুয়াখালীর দশমিনা থানায় আনার কয়েক মিনিটের মধ্যে এক আসামির ‘বিষপান’ এবং পরে মারা যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই আসামির নাম মো. লিটন খান (৩৫)। তিনি বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে। লিটন ঢাকায় অটোরিকশা চালাতেন। পুলিশ বলছে, বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন লিটন। তবে তার বাবা এর উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। স্থানীয়রা জানান, বাঁশবাড়িয়া রজ্জবিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি জমিতে শুক্রবার টিন-কাঠের ঘর নির্মাণ করেন লিটন। ওই রাতে মাদ্রাসার পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলা হয়। এ নিয়ে মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সিহাব উদ্দিন শনিবার প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌসকে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে তিনি লিটনের বিরুদ্ধে জমি দখল ও পুকুরে বিষ দেয়ার অভিযোগ করেন। ইউএনওর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। রোববার দুপুরে এএসআই মামুন খাওয়ার টেবিল থেকে লিটনকে ধরে নিয়ে আসেন। বিকাল ৪টার দিকে তাকে থানায় আনার কিছুক্ষণ পরই ‘বিষপান’ করেন লিটন। দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সঙ্গে থাকা আবদুল মফিজ মুহুরি জানান, রাত ১টা ১৫ মিনিটে লিটন মারা যান। সোমবার দুপুরে লিটনের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, খাবার টেবিলে ভাত মাখা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। লিটনের বাবা মো. আলাউদ্দিন খান বলেন, স্ত্রী মাজেদা এবং তিন ছেলে-মামুন, রহমান ও জাবেদকে নিয়ে দুপুরের ভাত খাচ্ছিল আমার পোলা। সেখান থেকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তার গায়ে গেঞ্জি ছিল। সে বিষ পাইল কই। যে জমিতে ঘর তোলা হয়েছে তা তাদের নিজস্ব বলে দাবি করেন তিনি। মাজেদা বেগম বলেন, জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী আকরাম খান ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। সুস্থ অবস্থায়ই ধরে নিয়ে গিয়ে অসুস্থ বলে পুলিশ আমাদের খবর দেয়। আমরা এর বিচার চাই। লিটনের ছেলে মামুন ও প্রতিবেশী আলতাফ সরদার, ফারুক, কাল, আলমসহ কয়েকজন জানান, শুক্রবার রাতে আবদুল মফিজ, ইব্রাহিম, জাকির, আসাদুলসহ ১০/১২ জন জয়নাল খার বাড়িতে পিকনিক পার্টি করে। তাদের কাউকে ঘটনার পর থেকে দেখা যাচ্ছে না। পিকনিকে অংশ নেয়া দেলোয়ার মৃধার ছেলে আ. রহমান জানান, মুরগি ও ডিম দিয়ে আমরা ১০/১২ জনে ডেকসেট বাজিয়ে ভাত খাইছি। এ বিষয়ে জানতে এএসআই মামুনের ফোনে একাধিকবার রিং দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ওসি মো. জসিম জানান, লিটনকে এএসআই মামুন রোববার বিকালে থানায় নিয়ে আসে। পরে প্রসাবের কথা বলে থানার পেছনে গিয়ে বিষ খেয়ে ডাক-চিৎকার করলে লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়। দশমিনা-গলাচিপা সার্কেল সিনিয়র এএসপি মো. ফারুক জানান, লিটন প্রসাবের কথা বলে থানার ভেতরে টয়লেটে বসে বিষ পান করে। তাকে থানার আনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌস জানান, মাদ্রাসা সুপারের অভিযোগ পেয়ে ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মাদ্রাসা সুপার মাওলানা সিহাব উদ্দিন জানান, অভিযোগ করেছি; কিন্তু লিটনের মৃত্যুর বিষয়ে আমি কিছু জানি না। |