বন্ধ ক্যাম্পাসে কাঠবিড়ালির রাজত্ব!!
ইসরাত জাহান কনিকাঃ- রাজশাহী
|
সময় নিউজ বিডিঃ রাকসু ভবনের সামনে লিচু গাছের বেদীতে বসে বাদাম খাচ্ছেন দুইজন শিক্ষার্থী। গল্প চলছে দুজনের মধ্যে। হঠাৎ করে তাদের সামনে দিয়ে দৌড় দিলো এক কাঠবিড়ালি। দেরি না করে হাতে থাকা কিছু বাদাম ফেলে দিলেন সামনে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ কয়েকটা কাঠবিড়ালি সামনের গাছ বেঁয়ে নিচে নেমে এলো। নিচে রাখা বাদামগুলো মুখে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে খেতে শুরু করলো। সে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এ দৃশ্য দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপিঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের। ৭৫৩ একরের সুবিস্তৃত সবুজে আচ্ছাদিত ক্যাম্পাসে প্রায়ই দেখা মেলে এমন দৃশ্যের। যা দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। করোনার পূর্বে ক্যাম্পাসে কাঠবিড়ালির সংখ্যা খুবই কম ছিল। বন্ধ ক্যাম্পাসে তাদের আনাগোনা বেড়ে গেছে বহুগুনে। হামেশায় চোখে পড়ে তাদের একগাছ থেকে আরেক গাছে লাফিয়ে চলার দৃশ্য। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের মূল ফটক দিয়ে জোহা চত্বরে আসতেই চোখে পড়ে অন্তত ১৫ টি কাঠবিড়ালি। রাস্তার ধারের বড় বড় দেবদারু গাছগুলো বেঁয়ে নেমে আসছে তারা। নিচে পড়ে থাকা খাবার মুখে নিয়েই আবার তর-তর করে উঠে যাচ্ছে গাছের উপরে। কখনও আবার কারও ফেলে রাখা বাদাম কিংবা অন্য খাবার আপন মনে খাচ্ছে। জোহা চত্বরের বাম পাশে প্যারিস রোড। প্যারিস রোডের গগন শিরীষ গাছগুলোতে দেহের পশম ঘন সন্নিবিষ্ট কাঠবিড়ালিগুলো দৌড়াদৌড়ির ফাঁকে মাঝেমধ্যে থেমে যাচ্ছে। ছাত্রী হলের পাশের গাছগুলোতে দেখা গেল মাথা উঁচু করে ত্রিকোণাকার কান সোজা করে এদিক-সেদিক তাকিয়ে দেখছে বেশ কয়েকটা কাঠবিড়ালি। যেন পুরো পৃথিবীকে দেখে নেওয়ার নেশা তাদের চোখে-মুখে। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের গবেষণা পুকুর পেরিয়ে হবিবুর রহমান হলের সামনের রাস্তা দিয়ে বদ্ধভূমি যেতেই দেখা মিলল প্রায় শ’খানেক কাঠবিড়ালির। রাস্তার ধারে পড়ে থাকা বাদাম বা অন্যান্য খাবার খেতে খেতে সামনের দুই পা দিয়ে কান চুলাকানোর দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। কথা হয় বন্ধ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, শৈশবে কাজী নজরুল ইসলামের শিশুতোষ কবিতা ‘খুকি ও কাঠবিড়ালি’ অধ্যয়নের মাধ্যমে কাঠবিড়ালির সাথে বেশ পরিচিত আমি। ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরির সময় প্রায়ই চোখে পড়ে এই প্রাণীটি। এটি দেখলে শৈশবের মতো এখনো ধরতে ইচ্ছে করে। মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসে বসে প্রাণীটির চঞ্চলতা উপভোগ করি। করোনার আগে প্রাণিটির সংখ্যা কম মনে হলেও বন্ধ ক্যাম্পাসে তাদের আনাগোনা এখন চোখে পড়ার মতো। কাঠবিড়ালিসহ সকল প্রাণিদের সংরক্ষণে প্রহরীদের সর্বদা সজাগ থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা এই অধ্যাপক। |