বাংলাদেশের লজ্জার হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উপমহাদেশে বিশ্ব রেকর্ড!
|
সময় নিউজ বিডিঃ কোনো বিশেষণে যেন বাধা সম্ভব নয় কাইল মায়ারসের ম্যাচ জেতানো ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংসটি। বিরুদ্ধ কন্ডিশন, মাথায় ৩৯৫ রানের পাহাড়সম চাপ ও তিন স্পিনারে সাজানো আক্রমণের বিরুদ্ধে ২০ চার ও ৭ ছয়ের মারে ৩১০ বলে ২১০ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস খেলেছেন মায়ারস। যা তার দলকে এনে দিয়েছে ৩৯৫ রান তাড়া করে অবিশ্বাস্য এক জয়।
মায়ারসের ডাবল সেঞ্চুরি ছাড়াও, এ জয়ে বড় অবদান ছিল এনক্রুমাহ বোনারেরও। চতুর্থ উইকেটে এ দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান মিলে যোগ করেন ২১৬ রান। যা কি না টেস্ট ইতিহাসে দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। এছাড়া আরও অনেক রেকর্ড ওলটপালট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ জয়ে। সেসব রেকর্ড দিয়েই সাজানো হলো এই প্রতিবেদন… চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডে পঞ্চম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা। ২০০৩ সালে নিজেদের ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এটিই বিশ্বরেকর্ড। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জিতেছে ৪১৪ রান তাড়া করে। এরপর রয়েছে অস্ট্রেলিয়া (৪০৪) ও ভারত (৪০৩)। এই ম্যাচের মাধ্যমে উপমহাদেশে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতদিন ধরে রেকর্ডটি ছিল শ্রীলঙ্কার দখলে। তারা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতেছিল ৩৮৮ রান তাড়া করে। এরপর রয়েছে ভারতের ৩৮৭ ও পাকিস্তানের ৩৭৭ রান। এশিয়ার মাটিতে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাও নিজের করে নিয়েছেন মায়ারস। কিংবদন্তি গর্ডন গ্রিনিজ ১৯৭৪ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে অভিষেকে করেছিলেন ১০৭ রান। পরের বছর লেন বাইচান লাহোরে করেছিলেন ১০৫ রান। তাদের ছাড়িয়ে এবার চট্টগ্রামে মায়ারস করলেন অপরাজিত ২১০। টেস্ট ইতিহাসে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন মায়ারস। তার আগে শেষবার অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন জ্যাক রুডলফ। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামেই ২২২ রান করেছিলেন প্রোটিয়া ওপেনার। এছাড়া অভিষেকে ডাবলের স্বাদ পেয়েছেন টিপ ফস্টার (২৮৭), লরেন্স রো (২১৪), ম্যাথু সিনক্লেয়ার (২১৪) ও ব্রেন্ডন কুরুপ্পু (২০১)। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে ষষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হলেও, অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসের হিসেব ধরলে, বিশ্বের একমাত্র ব্যাটসম্যান ডাবল সেঞ্চুরির মালিক হলেন মায়ার্স। এর আগে অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন ভারতের আব্বাস আলী বেগ (১১২)। অভিষেকের হিসেব বাইরে রেখে, টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ ইনিংসে রান তোলার হিসেব করলে মায়ারস রয়েছেন ষষ্ঠ স্থানে। টেস্টের শেষ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২২৩ রান করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই জর্জ হ্যাডলি। এছাড়া নাথান অ্যাস্টেল ২২২, সুনিল গাভাস্কার ২২১, বিল এডরিচ ২১৯, গর্ডন গ্রিনিজ ২১৪ রান করেছেন ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে। টেস্ট অভিষেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন মায়ারস। ভারতের বিপক্ষে ব্যাঙ্গালুরুতে অভিষেকে ২১৪ রান করেছিলেন লরেন্স রোয়ে। অভিষেক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান তোলার তালিকায় মায়ারসের অবস্থান চতুর্থ। দুই ইনিংস মিলে এ ম্যাচে তার সংগ্রহ ২৫০ (৪০ ও ২১০)। অভিষেক টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান লরেন্স রোর করা ৩১৪। এরপর আছেন টিপ ফস্টার (৩০৬) ও ইয়াসির হামিদ (২৭৫)। অভিষেকে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডেও দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন মায়ারস। সদ্য সমাপ্ত টেস্টে এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হাঁকিয়েছেন ৭টি ছক্কা। নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি নিজের অভিষেক টেস্টে ৭৭ রানের ইনিংস খেলার পথে ৯টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। এদিকে জুটির রেকর্ডেও ভাস্বর মায়ারস ও বোনার। চতুর্থ ইনিংসে চতুর্থ উইকেটে ২১৬ রানের জুটি গড়েছেন তারা। জয় পাওয়া ম্যাচে এ রান রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দ্বিতীয়। আর দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের জুটির রেকর্ড অবস্থানে দ্বিতীয়। |