শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার নামে অর্থ আদায়
ইসরাত জাহান কনিকাঃ-
|
সময় নিউজ বিডিঃ বগুড়ার শেরপুরে বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার নামে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে এই টাকা নেওয়া হয়। ওই প্রধান শিক্ষকের নাম বেল্লাল হোসেন। তিনি উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের ফুলজোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অভিযোগে জানা যায়, নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা পেতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সর্বশেষ সময় বাড়িয়ে চলতি মাসের ১৫ মার্চের মধ্যে আবেদন করার জন্য বলা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দূরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দৈব-দুর্ঘটনা এবং চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অসচ্ছল ও মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে বলেও উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এসব শর্তের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরাও এই অনুদানের টাকা পেতে বিদ্যালয়গুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনাকালীন প্রণোদনার টাকা দেওয়ার গুজব রটিয়ে পড়লে অনলাইনে আবেদনের হিড়িক পড়ে যায়। তবে আবেদনের সঙ্গে নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র জুড়ে দিতে বলা হয়। আর এই সুযোগ নিয়ে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের ফুলজোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেল্লাল হোসেন তার প্রত্যয়নপত্র দিতে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর নিকট থেকে ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের কয়েকজন ভুক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, অনুদান পেতে প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র লাগবে। এটি ছাড়া আবেদন করা যাবে না। তাই প্রত্যেকেই প্রত্যয়নপত্র নিয়েছেন। এ জন্য তাদের কারো নিকট থেকে ১০০ আবার কারো নিকট থেকে ১২০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এই টাকা না দিলে অনুদানের টাকা পাওয়া যাবে না বলে তাদের বলেন প্রধান শিক্ষক। তবে এই টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ফুলজোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, আমি কোনো টাকা নেইনি। অফিসের দপ্তরি রাজু আহম্মেদ খরচের জন্য কিছু টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। এছাড়া টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না-এই বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এদিকে দপ্তরি রাজু আহমেদের নিকট বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর নিকট থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আর প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি কিভাবে দিয়েছেন সেটি আমার জানা নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজমুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি মোখিকভাবে শুনেছি। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। |