কেন নীরব রাবি প্রশাসন।
ইসরাত জাহান কনিকাঃ- রাজশাহী
|
সময় নিউজ বিডিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পুকুর খননের কোটি কোটি টাকার মাটি অবাধে ইটাভাটায় পাচার হয়ে যাচ্ছে। রাবি ক্যাম্পাসের ভেতরে গত মার্চ থেকে ১০ বিঘা আয়তনের পুকুরটি খননের কাজ চলছে। ঠিকাদার মাসুদ রানা টেন্ডার পেয়ে খননকাজ করছেন। টেন্ডার শর্তে স্পষ্ট বলা আছে, খননের মাটি দিয়ে পাড় বাঁধাইয়ের পর অতিরিক্ত মাটি পুকুরের চারপাশে ও ক্যাম্পাসের কৃষি প্রকল্পের জায়গায় জমা রাখতে হবে। এ মাটি কোনোভাবেই ক্যাম্পাসের বাইরে পাচার করা যাবে না। কিন্তু ঠিকাদার তা কোনোভাবেই মানছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাটি পাচার ঠেকাতে ঠিকাদারকে দুই দফা নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া ছাড়া রহস্যজনক কারণে আইনি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কারণ ঠিকাদার মাসুদ রানা মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীনের ভাই। এদিকে মাটি পাচার রুখতে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে রাবি কৃষি প্রকল্পের উপদেষ্টা ও প্রোভিসি অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা যুগান্তরকে বলেছেন, আমরা কয়েক দফা প্রশাসনিক সভা করে ঠিকাদারকে মাটি পাচার বন্ধের নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু ঠিকাদার কোনো কথাই শুনছে না। ঠিকাদার বেপরোয়া হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। মাটি পাচার রুখতে কবে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হবে, তা জানতে চাইলে প্রোভিসি বলেন, এজন্য রাবির প্রশাসনিক অনুমোদন প্রয়োজন, যা এখনো পাওয়া যায়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, রাবি ক্যাম্পাসের পূর্বকোণে শহিদ শামসুজ্জোহা হল সংলগ্ন নয়ানজুলি এলাকায় ১০ বিঘার পুকুর খনন করা হচ্ছে। খনন কাজ চলছে ২৪ ঘণ্টা। মাটি পাচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইপার কলোনির পূর্ব ফটক ব্যবহার করা হচ্ছে। খনন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ক্যাম্পাস থেকে তিন শতাধিক ট্রাক, ট্রাক্টর ও দুই শতাধিক ট্রলি করে মাটি যাচ্ছে বাইরে। কোথায় এসব মাটি যাচ্ছে-জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক বলেন, খড়খড়ি, কাটাখালী, চৌদ্দপাই, হরিয়ান, মেহেরচন্ডিসহ আশপাশের এলাকায় ৫০টির বেশি ইটভাটা রয়েছে। এসব মাটি প্রতি ট্রাক ৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ হলেও তা পাচার ঠেকাতে কোথাও কেউ কিছু করছে না। রাবি প্রশাসনের এই রহস্যজনক ভূমিকায় মানুষ ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ। জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটি ইতোমধ্যে মাটি পাচার বন্ধের বিষয়ে একাধিক সভা করেছেন। মাটি পাচার বন্ধে নানা উপায় নিয়েও নাকি আলোচনা হয় ওইসব সভায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের সম্মতি না থাকায় তা কার্যকর করা হয়নি। ঠিকাদার মাসুদ রানা যুগান্তরকে জানান, মাটি বিক্রি করে তিনি কোনো অন্যায় করছেন না। টেন্ডার শর্ত লঙ্ঘন করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাসুদ রানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মৌখিক অনুমতি আছে বলেই মাটি বাইরে নিয়ে যাচ্ছি। রাবি প্রশাসনের কার নির্দেশে মাটি পাচার করছেন জানতে চাইলে তিনি নাম বলতে পারব না বলে ফোন কেটে দেন। |