ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের ছড়াছড়ি বাগমারায়।
ইসরাত জাহান কনিকাঃ- রাজশাহী
|
সময় নিউজ বিডিঃ রাজশাহীর বাগমারার আনাচে-কানাচে ও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি। এসব ভুয়া ফার্মেসির অধিকাংশেই চলছে রমরমা ভেজাল মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ভারতীয় ওষুধের ছড়াছড়ি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এসব ফার্মেসির মালিক ও কর্মচারীরাই ডাক্তার সেজে রোগী দেখেন ও ওষুধ বিক্রি করে থাকেন। ফলে একদিকে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে এবং সাধারণ রোগীরা হচ্ছেন প্রতারিত। উপজেলার তাহেরপুর, গোয়ালকান্দি, হামিরকুসৎসা, শিকদারী, যোগিপাড়া, ভবানীগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, মচমইল, হাটগাঙ্গোপাড়া, বাইগাছা, নরদাশ ও সোনাডাঙ্গাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে রয়েছে অগণিত কথিত ফার্মেসি। এসব ফার্মেসিতে দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের ভেজাল ওষুধ, সরকারি ওষুধ ও ভারত থেকে আমদানি করা নিষিদ্ধ ওষুধ দেদারসে বিক্রি করে আসছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। সম্প্রতি ভোক্তা অধিকারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম হোসাইন ও বাগমারা উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আশরাফুল ইসলাম মন্ডল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে উপজেলার দেউলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে জুয়েল ফার্মেসিকে ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ রাখার দায়ে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সেই সাথে তারা লিফলেট বিতরণ ও হ্যান্ড মাইকিং করে এলাকার জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। তারপরও থামছে না লাইসেন্সবিহীন ওষুদের রমরমা ব্যবসা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহেরপুরের দুইজন ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, বাগমারায় ওষুধের ব্যবসায় চরম অরাজকতা চলছে। এখানে অনেকে লাইসেন্স ছাড়াই স্থানীয় সমিতির মাধ্যমে ওষুধ প্রশাসনের লোকজনকে ম্যানেজ করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত দিনে করোনা মহাসংকটকালে ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অসাধু অনেক ব্যবসায়ীরা টাকার পাহাড় গড়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের অনেকের লাইসেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও তারা নবায়ন করছেন না। আবার অনেক স্থানে একজনের লাইসেন্স দিয়ে ভিন্ন স্থানে একাধিক ফার্মেসির দোকানও চালানো হচ্ছে। ভুয়া এসব ফার্মেমিতে চিকিৎসার নামে চালানো হচ্ছে অপচিকিৎসা। এসব ফার্মেসিতে অপচিকিৎসার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন গরীব স্বল্প আয়ের লোকজন। তারা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই দেদারছে ওষুধ বিক্রি করছে হরদম। এসব ওষুধের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ব্যান্ডের নকল ও ভেজাল ওষুধ। এসব ওষুধ সেবন করে শারীরিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গরিব রোগীরা। এলাকার ভুক্তভোগীদের দাবি এসব অসাধু ওষধ বিক্রেতাদের রুখতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিয়মিত তদারকি ও অভিযান পরিচালনা করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম রাব্বানী জানান, আমরা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো তদারকি করে থাকি। ফার্মেসির বিষয়টি ওষুধ প্রশাসন ও ড্রাগসমিতির মাধ্যমে তদারকি হয়। ভবানীগঞ্জ বাজার কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মাফু জানান, আমাদের ভবানীগঞ্জ বাজারে যারা ওষুধ ব্যবসায় জড়িত তারা সবাই যথাযথ লাইসেন্স নিয়ে সরকারি বিভিন্ন বিধিবিধান মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তবে তবে বাইরের বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তারা কে কীভাবে ব্যবসা করছে তা আমাদের জানার বাইরে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানান, বিষয়টি ওষুধ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। তারপর আমরা মেয়াদ উত্তীর্ণ আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধসহ বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিরোধে অভিযান পরিচালনা করে থাকি। বাগমারার এসব বিষয় নিয়ে প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |