ঈদের পর কিছু মানুষের মুখোশ খুলব : শামীম ওসমান
শারমিন আক্তার
|
সময় নিউজ বিডিঃ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, ‘আমার চাল-চলন, আচার আচরণে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন। রাজনীতি করি তাই অনেক সময় অনেক কথা বলতে হয়। অনেকে হয়ত কষ্ট পেয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘মরে গেলে আমার জন্য হয়ত জীবিতরা ক্ষমা চাইতে পারবে। তাই বেঁচে থাকতে আপনাদের সকলের কাছে আমার ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত যে কোনো ভুল বা কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে আল্লাহর ওয়াস্তে ক্ষমা করে দেবেন। আমি সব সময় ক্ষমা চাই। আল্লাহ বলছেন তুমি ক্ষমা চাও আমি ক্ষমা চাইলে খুশী হই।’ শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) জুমার নামাজের পূর্বে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর কবরস্থান মসজিদে বড় ভাই সাবেক সাংসদ নাসিম ওসমানের ৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনা আসছে আমাদের শিক্ষা দিতে। আল্লাহ বান্দাদের বোঝাতে চাচ্ছেন কে আসলে প্রকৃত ক্ষমতাবান। দুনিয়ার বাহাদুরিতে কোনো বাহাদুরি নেই। মরে গেলে আপনার আমার পরিচয় লাশ। অহংকার মাটির সাথে মিশে যাবে। ওসমান বলেন, কত মানুষ-ই তো ক্ষমতাবান ছিল। আজ তো তারা নেই। তারপরে আমাদের শিক্ষা হয় না। এক করোনাভাইরাস এলো। এরপরেও আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ ভালো হতে পারল না। কারো সম্পত্তি দখল করি, অহংকার করি। তাই সময় আছে বেঁচে থাকতে তওবা করুন। আর মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। তিনি বলেন, জীবনে যেমন এসেছি সরবে, চলে যাব নীরবে। একইভাবে রাজনীতিতে আসছি সরবে, দরকার পড়লে চলে যাব নীরবে। কিন্তু যাওয়ার আগে অনেকের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়ে যাব। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল ভারতের রাজধানী দিল্লীর দেরাদুন শহরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে ১৯৮৪, ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। প্রয়াত নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন, সাবেক এম এল এ, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহোচর ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার অন্যতম ব্যক্তিত্ব মরহুম একেএম শামসুজ্জোহা ও প্রয়াত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহার বড় ছেলে এবং বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ ও ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও একেএম শামীম ওসমানের বড় ভাই। সেই সাথে তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে সব থেকে বেশি মেয়াদে নির্বাচিত ৪ বারের সংসদ সদস্য। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাসিম ওসমান ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এর আগের দিন ১৪ আগস্ট তিনি পারভীন ওসমানকে বিয়ে করেন। বিয়েতে শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামাল উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে নাসিম ওসমান নববধূকে ফেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চলে যান। তিনি ঢাকায় প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। এরপর ভারতে চলে যান এবং সেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চালান। তৎকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। |