লক্ষ্মীপুরে সমঝোতায় কোটি টাকার বালু ১২ লাখ টাকায় বিক্রি
সিনিয়র রিপোর্টারঃ লক্ষ্মীপুর
|
লক্ষ্মীপুরে রহমতখালী নদী থেকে উত্তোলনকৃত প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের বালু মাত্র সাড়ে ১২ লাখ টাকায় সমঝোতা করে নিলামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। নিলামে নামমাত্র দামে বিক্রি করায় পৌনে ১ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
লক্ষ্মীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়িত রহমতখালী এবং ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ শীর্ষক প্রকল্পের ড্রেজার দিয়ে ৭২৪৬৪ দশমিক ৪০ ঘনমিটার বালু উত্তোলন করা হয়। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি টাকারও বেশি।
বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সহঝোতা করে একটি বালুখেকো প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নিলামে বাগিয়ে নেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুমসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাব্যক্তিরা।
সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার রহমতখালী খাল এবং রায়পুর উপজেলার ডাকাতিয়া নদীভাঙন রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ শীর্ষক প্রকল্পে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। যার প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে ১২ লাখ ২৯ হাজার ৭২০ দশমিক ৮৬৮ টাকা। নিলামে দরপত্র বিক্রয়ের সর্বশেষ তারিখ ছিল ৮ জুন। নিলামে ২৪টি শিডিউল বিক্রি হলেও সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য ছাড়া কেউ অংশগ্রহণ করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন নিলামবঞ্চিতরা।
কয়েকজন ঠিকাদার জানান, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন প্রকল্পের দরপত্রে কাজ পায় মেসার্স সামিয়া এন্টারপ্রাইজ। তারা ড্রেজিং করলেও একই প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশ নিয়ে নামমাত্র মূল্যে বালু ক্রয় করেন।
প্রতিষ্ঠানটিকে নিলাম পাইয়ে দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ গোপনে সমঝোতা করে প্রাক্কলিত মূল্য নামমাত্র দিয়েছে। এতে আমরা সাধারণ ঠিকাদাররা নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য দরপত্র নিলেও অংশগ্রহণ করতে দেয়নি এই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রায় ২৫ লাখ ফুট বালুর বাজারমূল্য ১ কোটি টাকার ওপর।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. ইমতিয়াজ বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে আমি বালু ক্রয় করেছি। প্রভাব খাটানোর বিষয়টি ঠিক নয়। লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী এবং পানিসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ বলেন, সরকারের রাজস্ব কম হয়েছে। বিষয়টি এখন বোঝা গেছে। এ নিয়ে জেলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেওয়া হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী নিলাম আহ্বান করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে নির্ধারিত প্রাক্কলিত মূল্য অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে নিলাম। নিলামে অংশগ্রহণকারী কেউ এর বেশি দামে বালু ক্রয় করতে রাজি হননি। তাই সর্বোচ্চ দরদাতাকে নিলামে বালু দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিলামে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে জানান তিনি।
|