কাফনের কাপড় পরে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া দুই যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী বিরুদ্ধে।
মহসিন রেজাঃ- সাতক্ষীরা
|
সময় নিউজ বিডিঃ- সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া দুই যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী বিরুদ্ধে। গতকাল শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম পাতাখালি বেড়িবাঁধে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। হামলার শিকার শাহিন বিল্লাহ্ পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব পাতাখালি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী। অপর হামলার শিকার ইয়াছির আরাফাত পাতাখালি গ্রামের জামাত আলী মোল্লার ছেলে। তারা উভয়ই উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। ইয়াছির আরাফাত জানান, শুক্রবার (২৮ মে) সকালে ভাঙনকবলিত বাঁধে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে প্রতীকী লাশ হয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেই আমরা। বিভিন্ন মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে উপকূলবাসীর দাবির বিষয়টি প্রকাশ পায়। গতকাল সকালে পশ্চিম পাতাখালি এলাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ চলছিল। সেখানে সহযোগিতার কাজে গেলে শাহিন বিল্লাহর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর কবির ও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। তারা বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি করেছ কেন? এসব করার কী দরকার। তোমাদের নামে মামলা দেওয়া হবে। ইউএনও সাহেব মামলা দিতে বলেছে। এসব বলতে বলতে শাহিন বিল্লাহ্কে গলা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং চড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন চেয়ারম্যান। পরে উপস্থিত লোকজন তাকে রক্ষা করেন। ইয়াছির অভিযোগ করেন, ঘটনা জানতে গেলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে মারপিট করেন চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। পাশে দাঁড়িয়ে উসকানি দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর কবির। অভিযোগের বিষয়ে প্রকৌশলী আলমগীর কবির বলেন, ‘আমি তাদের কারও গায়ে হাত দেইনি। চেয়ারম্যান দু-একটি চড়-থাপ্পড় দিয়েছেন। তারা বাঁধ নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে চেয়ারমানকে না জানিয়ে। ঘটনা ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় চেয়ারম্যানের ওপর চাপ পড়েছে। মূলত সেই বিষয়টা নিয়েই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার বিষয়ে চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করে পরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে কল দিলেও আর রিসিভ করেননি। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, মানববন্ধন করা বা দাবি নিয়ে কর্মসূচি পালন করা মানুষের মৌলিক অধিকার। আমি মামলা দিতে বলব কেন? কেউ এ কথা বলে থাকলে মিথ্যা বলেছেন। আমি এখনই বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। |