পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায় স্বস্তিতে কুয়াকাটার পর্যটন ব্যাবসায়ীরা।
মোয়াজ্জেম হোসেন,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)।।
|
সময় নিউজ বিডিঃ দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার খবরে কুয়াকাটায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এমন ঘোষণায় কুয়াকাটার শতাধিক হোটেল মোটেল’র কর্মকর্তা-কর্মচারী সাজ গোজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে সকল ধরনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা নুতন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করছেন। করোনা সংক্রমন পরিস্থিতে চলমান লকডাউনে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় গভীর সংকটে পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের ব্যবসায়িরা। প্রায় ৫ মাস ধরে বন্ধ থাকায় কয়েক’শ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে এমন দাবি কুয়াকাটা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িদের।
এদিকে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখার উপ-সচিব মো.রেজাউল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে সূত্রে জানা গেছে, ১৯ শে আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিনিউটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখা শতকার ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। সকল ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কতৃক প্রনীত স্বাস্থ্য বিধি যথাযথ ভাবে পালত করবে। স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনে অবহেলা করলে কতৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কুয়াকাটা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হোটেল-মোটেলগুলো ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করছেন কর্মচারীরা। পর্যটকদের থাকার জন্য নিরাপত্তা সহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং জীবানুনাশক স্প্রে ব্যাবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় হোটেল মোটেল মালিকরা জানায়, লকডাউনে কারনে অফিসের কোন কাজ কর্ম নেই। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সব কিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় বসে বসে খেয়ে অনেকেরই ঋনের বোঝা ভারি হয়েছে। তাই হোটেল মোটেল ছেড়ে কেউ চাষাবাদ করছে। কেউ কেউ নিজ বাড়িতে গবাদী পশুসহ হাঁস মুরগীর খমার শুরু করছেন। কেউ আবার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবে ১৯ আগস্ট দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ায় ঘোষনায় কুয়াকাটায় ট্যুরিজম ব্যবসায়ীদের মাঝে এখন খুশির বন্যা বইছে।
কুয়াকাটা পায়রা ফুডস এন্ড মিনি চাইনিজ’র স্বত্ত্বাধিকারী মো.রেজাউল করিম জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে বসে খেয়েছি, কর্মচারী এবং দোকান ভাড়া গুনেছি। এমন খবর শুনে আবার নতুন করে শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কুয়াকাটা সৈকতের ট্যুরিজম ব্যাবসায়ী কে এম বাচ্চু জানান, দীর্ঘদিন ধরে পর্যটক না আসায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছি। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে নুতন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্ক এন্ড ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী এবং ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, সরকার যে শর্ত দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলো যেভাবে খুলে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে, ঠিক সে ভাবেই আমরা পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতদিন অনেক কর্মচারীকে ছুটি দেয়া হয়েছিল তাদেরকে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন কুটুম‘র সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। এর সাথে দেশের ৪০ লক্ষ লোকের জীবন জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। এ বিবেচনা করে ১৯শে আগস্ট দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে তাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের এ এসপি মো.আব্দুল খালেক বলেন, পর্যটন খুলে দেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত অফিশিয়াল ভাবে কোন নির্দেশনা আসেনি। তবে নির্দেশনা পেয়ে সেই মোতাবেক পর্যটকদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোন অদেশ কিংবা চিঠি পাইনি।
|