নিউজ ডেস্কঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দুই ভাইয়ের অক্লান্ত চেষ্টায় গড়ে উঠেছে সৌদি খেজুরের বাগান। প্রায় একযুগ ছিলেন ছোট ভাই প্রবাসে কাজ করতেন সিঙ্গাপুরের সেমকোব মেরিনে এসিস্টান্ট ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। দেশে ফিরে এসে কিছু করার চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকে ২০১৭ সনের এপ্রিল মাসে সিঙ্গাপুর থেকে ২ কেজি মরিয়ম জাতের খেজুর কিনেন, সেই খেজুরের বীজ থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরশহরের বাড়ির ছাদে পলিব্যাগে চারা তৈরি করেন।
এ পলিব্যাগের চারা দিয়ে গড়েছেন খেজুরের বাগান। বর্তমানে তার বাগানে রয়েছে ৯ প্রকারের বিদেশি খেজুরের গাছ। ইতোমধ্যে পঁচিশটি গাছে এসেছে বঁাধা। দুই ভাই মো. মোজাহিদুল ইসলাম রুবেল আর বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন মিলনের অক্লান্ত চেষ্টায় কলাপাড়া পৌর শহর সংলগ্ন টিয়াখালী ইউনিয়ন এলাকায় প্রায় ২৭ শতক জায়গায় তৈরি করেছেন সৌদি আরবের খেজুরের বাগান। এ বাগানে রয়েছে আজুয়া, মরিয়ম, সাফাই, তিউনিশিয়া, পাইরুম, আনবরা, ডাব্বাস, মাদজুল, সুকাই এ ৯ প্রকারের খেজুরের গাছ। ২০১৮ সালের জুন-জুলাই মাসে ৫৫টি খেজুর গাছের চারা দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে এ বাগানে রয়েছে ৯৬টি সৌদি খেজুরের গাছ।
দর্শনার্থী ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক মোল্লা বলেন, এই বাগানের অনেক গাছে ফলন এসেছে। যা আমাদের এলাকায় মুচি বলে। এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা তাদের পিতার জমিতে এরকম বাগান করতে পারে।
দর্শনার্থী ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আরেফীন বলেন, দক্ষিণ অঞ্চলের নোনা পানিতে সৌদি খেজুরের বাগান করে বাস্তবে রূপদান করা এটা অসম্ভবকে সম্ভব করা।
দর্শনার্থী চয়ন কুমার বলেন, খেজুরের গাছে ফুল ধরেছে এটা দেখতে ও বাড়িতে লাগানোর জন্য চারা নিতে এসেছি।
উদ্যোক্তা’র বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন মিলন বলেন, প্রথমে তেরটা কঁাধি করছি, কঁাধির মাঝখানে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করি। প্রথম অবস্থায় এ কঁাধিতে ৫৫টি চারা রোপন করেছি। বর্তমানে চারার বয়স চার বছর। অনেক গাছে ফুল এসেছে।
উদ্যোক্তা মো. মোজাহিদুল ইসলাম রুবেল বলেন, শুরুটা বলতে গেলে ২০১৪ সনে আমার মাথায় পরিকল্পনা আসে। আমি সিঙ্গাপুর থেকে বীজ সংরক্ষণ করি। গাছটি সব মাটিতে হবে, তবে এর জন্য আলাদা পরিচর্যা করতে হবে। এর প্রধানত রোগ হলো ছত্রাক। মাত্র চার বছর খেজুরের বাগানে পানি, গাছ পরিস্কার ও বালাই নাশক ব্যবহারের ফলে সঠিক সময়ে খেজুর গাছে ফুল এসেছে।
উদ্যোক্তার পিতা মো. সুলতান নাসির উদ্দিন বলেন, এলাকার লোকজন এ বাগান দেখতে আসে। ছেলে দুজনকে উৎসাহ দেয়। লোকজন বলে ওরা এ বাগান দিয়ে সফলকাম হলে এলাকায় অনেক উদ্যোক্তা বাড়বে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার এ. আর. এম. সাইফুল্লাহ বলেন, বাগানে প্রায় ছিয়ানব্বইটি সৌদি খেজুরের গাছ রয়েছে। ২৫টি গাছে ফল আসা শুরু করেছে। বাগান পরিদর্শন করে কৃষক ভাইয়ের যত সহযোগিতা দরকার সেটা আমরা করবো।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ১৪