নতুন সিইসি গঠন, সিইসি প্রধান সাবেক সিনিয়র সচিব হাবিবুল আউয়াল।
|
নিউজ ডেস্কঃ সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। নির্বাচন কমিশনার (ইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান। শনিবার বিকেলে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। রোববার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে নতুন সিইসি ও ইসিদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটির বাছাই করা ১০ জনের নাম গত বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে জমা দেয়া হয়। সেদিনই জানানো হয়েছিল যে নামগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপ্রধান। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত কমিশন কার্যত শূন্য ছিল। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে এবার প্রথম আইন করেছে সরকার। এর আলোকে নাম বাছাই করতে গঠন করা হয় সার্চ কমিটি। এর আগের দুটি কমিশনও সার্চ কমিটি গঠন করেই করা হয়েছিল, যদিও তখন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ছিল না। গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এই কমিটি নিজেদের মধ্যে বৈঠক ছাড়াও বিশিষ্টজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের পরামর্শ নেয়। কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সুপারিশ করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করে। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ আগ্রহী হলে তারও নাম জমা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাম পাঠানোর সুযোগ ছিল। পরে দুদিন বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবার নাম পাঠানোর সুযোগ দেয়া হয়। তবে যে কারণে এই বাড়তি সময় দেয়া হয় সেটি সফল হয়নি। বিএনপি বর্ধিত সময়েও কোনো নাম প্রস্তাব করেনি। জমা পড়া ৩২২টি নাম গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। পরদিন আট বিশিষ্ট সাংবাদিকের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেও কিছু নাম আসে সার্চ কমিটিতে। এরপর তালিকা সংক্ষিপ্ত করতে ১৯ ফেব্রুয়ারি বসে আরেকটি বৈঠক। ওই বৈঠকে তালিকা থেকে তিন শতাধিক নাম ছেঁটে ফেলা হয়। ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করার দিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) সামসুল আরেফিন জানান, আরও দু-একটি বৈঠক করে ১০ জনের চূড়ান্ত তালিকা করে রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া হবে। তবে পরের দিনের বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা যায়নি। সেই তালিকায় থাকে ১৩ নাম। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত করা হয় ১০ নাম। এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটি গঠন করে করা হয়েছিল। এই কমিটি রাষ্ট্রপতিকে নাম সুপারিশ করার পর ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও ২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। দু’বারই বিএনপি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়। সার্চ কমিটিতে নামের তালিকাও জমা দেয় দলটি। তবে এবার বিএনপি শুরু থেকেই সার্চ কমিটির বিরোধিতা করেছে। সার্চ কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৈঠকে অংশ নেয়নি। কোনো নামও দেয়নি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে আপিল বিভাগ অসাংবিধানিক ঘোষণার পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ। তবে এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামে বিএনপি। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা একটি মীমাংসিত ইস্যু। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করতে এবার নির্বাচন কমিশন আইনও করা হয়েছে। আর এই আইনের আলোকেই গঠন করা হয় সার্চ কমিটি। |