কুয়াকাটা সৈকতজুড়ে ময়লা আবর্জনা, অস্বস্তিতে পর্যটকরা।
মোয়াজ্জেম হোসেন পটুয়াখালী।
|
![]() পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতিবছর বেড়াতে আসেন লাখো পর্যটক। সপ্তাহের শুক্রবার এবং শনিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক পর্যটক এখানে ভীড় জমায়। কিন্তু বর্তমানে সৈকতের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা আবর্জনা। বিভিন্ন নিচু স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে জমে রয়েছে পানি। ফলে দূষিত হচ্ছে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের পরিবেশ। পঁচা গন্ধে আগত পর্যটকদের চোখে মুখে দেখা গেছে বিরক্তির ছাপ। পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকট এবং প্রতিনিয়ত সৈকত পরিচ্ছন্ন না করার ফলে এমন দুরাবস্থা হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাই খাবারের অবশিষ্টাংশসহ বিভিন্ন প্লাষ্টিকের বোতল ফেলে রাখছে সৈকতে। এছাড়া সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে ও পূর্ব পাশে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ফুসকা-চটপটি এবং ফিস ফ্রাইয়ের দোকান। এসব দোকানের বর্জ্যও ফেলে রাখা হয় সৈকতে। বিশেষ করে সৈকতের বেড়িবাঁধের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিভিন্ন হোটলের পানি এসে পড়ে সৈকতে। এসব পানি সৈকতের পশ্চিম পাশের নিচু স্থানে জমে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সৈকতে পরে থাকার খাবারের অবশিষ্টাংশ এবং পঁচা পানি ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। আর এ দুর্গন্ধে অনেকটা বিরক্ত পর্যটকরা। এদিকে সৈকতের গঙ্গামতি, ঝাউবাগান ও লেম্বুর চরে প্রায়ই ভেসে আসছে মৃত জেলিফিস। এসব জেলিফিস পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ালেও অপসারনে নেই কোন উদ্যোগ।
লালমনিরহাট থেকে আসা পর্যটক আরিয়ান জানান, আমরাই প্লাষ্টিকের বোতলসহ খাবার ফেলে রেখে সৈকত অপরিচ্ছন্ন করে রাখছি। আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। এছাড়া এখানের ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছেমতো সৈকতটি ব্যবহার করছে। বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখছে। সার্বক্ষনিক সৈকত এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
খুলনা থেকে আসা নাবিল-রাইমা দম্পত্তি জানান, সৈকতের পশ্চিম পাশে জমে থাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। যার ফলে বেঞ্চিতে বসে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করতে সমস্যা হচ্ছে।
সৈকতের চটপটি-ফুচকা ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বলেন, আমরা সৈকত সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি। পৌরসভার কয়েকজন সপ্তাহে দুইবার সৈকত পরিচ্ছন্ন করে। তাদের আমরা টাকা দেই। কিন্তু পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট রয়েছে।
সৈকত লাগোয়া কসমেটিক্স ব্যবসায়ী মো.সুলতান বলেন, পৌরসভার কর্মীরা সঠিকভাবে সৈকত পরিচ্ছন্ন করেনা। যার ফলে সৈকতের আজ এ দুরাবস্থা।
ওয়ার্ল্ড ফিস ইকোফিস-২ এক্টিভিটি প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, আমরা কুয়াকাটায় ব্লু-গার্ড কর্মীদের মাধ্যমে সৈকত পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও জনগণকে সচেতন করতে নানারকম উদ্যোগ গ্রহণ করছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, সৈকতের পরিচ্ছন্নতার কাজে ৪০ জন কর্মী রয়েছে। এছাড়া পৌরসভার কর্মী এবং ব্লুগার্ডের সদস্যরাও এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তারপরও আমাদের মনে হচ্ছে সৈকতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকট রয়েছে। বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির মাধ্যমে অচিরেই আরো পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দিয়ে পরিচ্ছন্নতা কাজের গতিশীলতা বাড়ানো হবে।
|