লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধকে গুম করলো ছেলেরা
এস এম আওলাদ হোসেন
|
ক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সম্পত্তির লোভে চার ছেলে কর্তৃক তাদের বাবাকে (৬৮) রাতের আঁধারে হাত-পা বেঁধে গাড়িতে তুলে অজানা স্থানে গুম করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় শুক্রবার (১৮ জুলাই) বৃদ্ধকে উদ্ধার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রামবাসি। এঘটনায় শনিবার সকালে রাগে ও ক্ষোভে বৃদ্ধার নাতি মোঃ রাফি তার মামা উজ্জলকে মারধরের চেষ্টা চালায়। এসময় বৃদ্ধকে খুঁজে বের করে দিতে গ্রামবাসিরাও উত্তেজিত হয়ে বসতঘররের কয়েকটি স্থানে কুপিয়ে ক্ষত করেছে। হাজিমারা ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাত ৩টার সময় উপজেলার উত্তর চরবংশি ইউপির পুর্বচরবংশি গ্রামের বেপারি বাড়িতে (হোডাগো বাড়ি) এঘটনা ঘটেছে। এঘটনার পর এলাকায় তোলপাড় চলছে এবং এখনো গুম হওয়া বৃদ্ধর বৃদ্ধ মাতাসহ পরিবারে সদস্যরা বাড়িতে কান্না করছেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাবেক মেম্বার আবু তাহের ও বর্তমান মেম্বার মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বৃদ্ধ মোঃ উল্লাহ (৬৭) তাঁর স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন। তার কৃষি জমি ও ২ কোটি টাকার ১৫টি গরুর দুগ্ধ খামারসহ তিন একর সম্পদ রয়েছে। ৪ ছেলের সবাই পরিবার নিয়ে পৃথক বসবাস। সন্তানদের দাবী তাদের পিতা জিবিত অবস্থাতেই সম্পদের বন্টন হতে হবে। তবে পিতার বক্তব্য, জীবিত থাকা অবস্থা কোনো বন্টন হবে না। আমাদের সন্দেহ এ জমির বিরোধ নিয়েই বৃহস্পতিবার রাত ৩টার সময় ছেলেরা সবাই মিলে বৃদ্ধ মোহাম্মদ উল্লাকে হাত, পা, মুখ বেঁধে পাগল ও মাদক সেবী সাজিয়ে প্রচারনা চালিয়ে একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামবাসি গাড়িটি প্রতিরোধের চেষ্টা করলে ইব্রাহীম ও সবুজকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এঘটনায় বৃদ্ধ’র স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, তার স্বামী ভালো লোক না। ২৫ বছর বিদেশ করে এবং কোটি টাকা গরুর খামারের সকল আয় সে নীজেই একা ভোগ করে আসছেন। সেই সাথে আমাকে কাজের মহিলার মত ব্যাবহার করতো সে। রাতের আঁধারে কেন হাত বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নেয়া হলো- কোথায় আছেন তিনি-? তার আরো তিন ছেলে কোথায়, প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারেনি তিনি। তিনি (বৃদ্ধ) যেখানেই আছেন, ভালো আছেন। গ্রামবাসীরা জানান, ছেলেরা কর্তৃক তাদের বৃদ্ধ বাবাকে গুম করার ঘটনাটি গ্রামবাসি রায়পুরের হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলে উল্টো বাদী পক্ষকে ফেরত পাঠান। পরবর্তীতে গ্রামবাসী নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে বিষয়টি অবহিত জানালে থানার ওসি তাদেরকে থানায় ডেকে পাঠান। পরে মামলা করতে চাইলে ওসি মামলা না নিয়ে প্রচার করানোর কথা বলেন। রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, ছেলেরা তাদের বৃদ্ধ বাবাকে চিকিৎসার জন্য রাতে ঢাকায় নিয়েছে। সুস্থ হলেই তাকে বাড়িতে নিয়ে আসবেন বলেছে ছেলেরা । |