শিক্ষক সংকটে গুনগত শিক্ষা হতে বঞ্চিত বাউফল চন্দ্রদ্বীপের শিশুরা।
মোঃ ইকবাল হোসেন নিরব ভোলা জেলা প্রতিনিধি।
|
নিউজ ডেস্কঃ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষক সংকটের কারনে। অত্র ইউনিয়নের প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা হলেও বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে জানা যায়।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদীর মাঝে অবস্থিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার মূল ভূখন্ডে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম খেয়া নৌকা। দুর্গম ওই ইউনিয়নের মানুষের প্রধান পেশা মাছ শিকার ও কৃষিকাজ। জেলে ও কৃষক পরিবারের অধিকাংশ শিশু লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার সাথে মাছ শিকারসহ কৃষিকাজে সহায়তা করছে পরিবারকে । ওই ইউনিয়নের মোট ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৫০ জন আর শিক্ষকের পদ রয়েছে ৩৩টি। কিন্তু বাস্তবে ৬টি বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩ জন শিক্ষক। এরমধ্যে চরওয়াডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৩ জন, দক্ষিণ চরওয়াডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন, চররায়সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩জন, চরকচুয়া-মিয়াজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন, চরব্যারেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ জন ও আসম ফিরোজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন শিক্ষক রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, দারিদ্র্যতার কারনে এখানকার শিশুদের সহজেই বিদ্যালয়মুখী করা যাচ্ছে না। তার উপর শিক্ষক স্বল্পতার কারনে প্রতিটি বিদ্যালয়ে পাঠদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের । এ অবস্থায় এখানে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পরেছে। দীর্ঘদিন শিক্ষক বদলী এবং সংযুক্তি বন্ধ করে রাখায় এ সমস্যার সমাধানও হচ্ছে না। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার আফরোজা বেগম বলেন, এমনিতেই আমরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। তার উপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে আমরা আরও পিছিয়ে যাবো। তিনি বলেন, দূর্গম জনপদ হওয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তারা নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন করেন না। আমি চন্দ্রদ্বীপের প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকের শূণ্যপদ পূরণের জন্য জোর দাবী করছি। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাচ মোল্লা বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাত্র ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এখানে শিক্ষক সংকট থাকায় বেশ কিছু শিশু প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়ে মূলভূখন্ডের স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করছে। তিনি বলেন, শিক্ষক সংকট দূর করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে পদক্ষেপ নেয়া হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ ঘোষ বলেন, বদলী ও সংযুক্তি বন্ধ থাকায় সেখানে শিক্ষক পদায়ন দেয়া যাচ্ছে না। তবে বদলী বা সংযুক্তির আদেশ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। |