বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সাথে ছড়িয়ে পড়ছে সংঘাত আহত ৩ শতাধিক।
মোঃ নোমান হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার।
|
![]() নিউজ ডেস্কঃ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত তিন শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্যও। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ ও মিছিল করার সময় এসব ঘটনা ঘটে।
![]() এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কোথাও কোথাও সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনাও ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্য আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিএনপি’র ডাকা সমাবেশের বিপরীতে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি ঘিরে গতকাল রণক্ষেত্রে পরিণত হয় কুমিল্লার নাঙ্গলকোট বাজার। এতে উভয়পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের সময় উপজেলা বিএনপি’র কার্যালয়, লোটাস চত্বর, পুলিশের একটি ভ্যান এবং বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়। ঝিনাইদহে বিএনপি’র সমাবেশে আসার পথে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দলের নেতারা জানিয়েছেন। নেত্রকোনার মদনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে দুইপক্ষের অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরে বিএনপি’র কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বাগেরহাটের চিতলমারীতে বিএনপি’র সমাবেশে যুবলীগের হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সাভারে যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন। নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যার প্রতিবাদে বিএনপি গতকাল সকালে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। অপর দিকে একই সময়ে বিএনপি’র নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সমাবেশ ডাকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল সকালে নাঙ্গলকোট বাজার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়ে।
উভয়পক্ষের সংঘর্ঘে ও পুলিশের টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেটের আঘাতে ৫০ শিক্ষার্থী ও পুলিশসহ উভয়পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এ সময় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়, লোটাস চত্বর, পুলিশের পিকআপ, নাঙ্গলকোট এ্যাপোলো হাসপাতাল, কয়েকটি মোটরসাইকেল ও বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে ভার্তি করা হয়েছে। নাঙ্গলকোট এ.আর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলা বিএনপি সভাপতি নজির আহম্মেদ ভূঁইয়া ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতৃত্বে হাজার-হাজার নেতাকর্মী সকাল থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রথমে নাঙ্গলকোট পশ্চিম বাজারে পুলিশ বাধা দেয়, এ সময় বাধা ভেঙে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল বাজারে প্রবেশ করে।
একই সময় উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক নজির আহম্মেদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল এসে একসঙ্গে হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পূর্ব থেকে লোটাস চত্বরে অবস্থান নেয়া উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন নয়নের নেতৃত্বাধীন নেতাকর্মীদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একই সময় আওয়ামী লীগের সমাবেশ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা রেলস্টেশন এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাজারে আসলে
উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা সাইদ ইকবাল, বাবলু, নজির আহম্মেদ সুমন, ফারুক হোসেনসহ অর্ধশত নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী আহত হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের কাঁদানে গ্যাসে শ্রেণিকক্ষে থাকা নাঙ্গলকোট এ.আর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী আহত হয়। নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি সভাপতি নজির আহম্মেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশ হামলা চালায়। হামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৫০ নেতাকর্মী আহত ও ৫ নেতাকে অন্যায়ভাবে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।
|