কলাপাড়ায় ভূমি অধিগ্রহণে বাছাইয়ের জটিলতায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ।
মাসুম বিল্লাহ কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
|
সময় নিউজ বিডিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বানাতিপাড়া মৌজার জমি শের-ই-বাংলা নৌঘাঁটির সম্প্রসারণের জন্য অধিগ্রহণের বাছাইয়ের জলিতায় অনেক ঘর-বাড়ী তালিকা হতে বাতিল হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় জনতা লালুয়া ইউনিয়নের পশরবুনিয়া গ্রামের সুইজ খাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধ রাস্তায় একত্রিত হয়ে বাছাইয়ের বিষয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেন। তাদের দাবী, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সরকারের চাহিদায় পত্রিক ভিটে-বাড়ি তারা ছেড়ে দিচ্ছে। তাই অধিগ্রহণের তালিকা হতে একটি ঘরও যেনো বাতিল না হয় এবিষয়ে তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জানা যায়, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বানাতিপাড়া মৌজার ৩২০ একর জমি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য বানৌজা শের-ই-বাংলা ঘাঁটির কার্যকর ব্যবহারের লক্ষ্যে ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়। এ লক্ষ্যে গত ২৯ নভেম্বর স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭ সনের ২১ নম্বর আইন এর ৪ ধারা অনুযায়ী একটি নোটিশ জারী করা হয়। নোটিশে ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে অভিযোগ দাখিলের জন্য ১৫ দিনের সময় উল্লেখ করা হয়। সে সময় অতিক্রম হলে গত ১৩ ডিসেম্বর রোববার পটুয়াখালী জেলা ভূমি অধিগ্রহণ অফিস ও শের-ই-বাংলা নৌঘাঁটি কর্তৃপক্ষের অফিসার তাদের প্রস্তাবকৃত ভূমি ও ঘর-বাড়ী বাছাই করতে সরেজমিনে আসেন। তারা তাদের ইচ্ছেমত ঘর-বাড়ী বাছাই করছেন বলে স্থানীয়রা দাবী করেন। নতুন বাড়ি বা নতুন টিনের ঘর দেখলে তার নামের তালিকা নিচ্ছেন না তারা। স্থানীয়দের দাবী, আমরা সরকার ও দেশের স্বার্থে নিজের সর্বস্ব ছেড়ে দিচ্ছি। আমাদের থাকার জন্য আবাসন ব্যবস্থাও তারা করছে না। তদুপরি, ঘর ও বাড়ির মূল্য না পেলে আমরা কোথায় গিয়ে দাড়াবো। তালিকা হতে বাতিল হওয়া স্থানীয় বাসিন্দা সলেমান ফরাজি বলেন, বাবার সাথে বনিবনা না হওয়ায় আলাদা বাড়ি করে বসবাস করছিলাম। আমার বাড়ি ও ঘর নতুন হওয়ায় তালিকায় আমার ঘর-বাড়ী বাদ পরেছে। এখন আমার বেছে থাকার আর কোন অবলম্বন রইলো না। আরেক ভুক্তভোগী রাকিবুল মোল্লা বলেন, ঘরের পিরা ভেঙ্গে যাওয়ায় মেরামত করেছিলাম। তাতেই নতুন ঘর বলে তালিকায় আমার ঘরের নাম উঠায়নি তারা। একদিকে ঘরের মূল্যও পেলাম না অন্যদিকে আবাসনও নেই। তাহলে এখন আমি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় গিয়ে দাড়াবো। এলাকার অনেক পরিবারের এখন একই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের মেয়ে ইরানি বেগমের ঘরটি কয়েক বছর আগের পুরানো ঘর স্বত্বেও কাঠের পাটাতন থাকায় এ ঘরটিও নতুন ঘর বলে তালিকায় উঠানো হয়নি।
তাই স্থানীয় এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে এভাবে ঘর বাছাইয়ের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, আমরাতো সরকারের কথায় সব কিছু ছেড়ে দিচ্ছি। তাই যাবার বেলায় আমাদের যার যা প্রাপ্য তা থেকে যেনো আমাদের বঞ্চিত করা না হয়। তারা এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
এবিষয়ে পটুয়াখালী জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, ওখানকার বিষয়ে আমি অবগত আছি। ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে আইনের মধ্যে থেকে আমাদের যতটুকু করণীয় আছে আমরা তা করবো।
|