পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
|
![]() পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আগামী নির্বাচনে আমাদের জয়ী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনারা কে কি করছেন, সব খবর আমার কাছে আছে। তাই সব কিছু ভুলে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের জন্য কাজ করুন। এখন আর বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। শনিবার (১৪ই জানুয়ারি) গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভার মুলতবি বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা দেন। এরআগে গত ৭ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ যৌথসভা হয়। পরে তা মুলতবি করা হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বৈঠকে জাতীয় ও উপদেষ্টা পরিষদের ২০জন নেতা বক্তব্য দেন। এর বাইরে ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বক্তব্য দেননি। তবে বৈঠকে কোনো নেতা কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেননি। এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার ভূইয়ার পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাজ করার নির্দেশনা দেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ নির্বাচনে পরাজিত করতে পারবে না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার আমলনামা আমার কাছে আছে। ফলে আমলনামা দেখে নৌকা মনোনয়ন দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আমরা কাছে বিভিন্ন সংস্থার তথ্য রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে যারা ভালো কাজ করেছেন, যারা জনগণের কাছে যান, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথা বলেন, ভোট চান, জনগণের সুযোগ-সুবিধা দেখেন এবং জনগণ যাদের চায়, তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। আর যারা জনবিচ্ছিন্ন এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক নেই, এলাকায় যান না, তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। দলীয় নেতাদের নিজ নিজ এলাকায় এলাকায় যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে নতুন ষড়যন্ত্র করছে। তারা সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। সরকার ফেলে দিতে চায়। তারা দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। ফলে আপনার নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় যান। তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরার পরামর্শ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিরোধী দল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সোচ্চার রয়েছে। সেই তুলনায় আমাদের নেতাকর্মীরা অনেকটা পিছিয়ে। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে পরিবর্তন ঘটেছে। আমি জানি এটা অনেকেই নিতে পারে না। তাই সরকার বিরোধীরা নানা ধরনের কথা রটায়। কিন্তু মানুষের জীবন যাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি আমরা করেছি। এটাকেও অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। করতে চাইবেও না। সেকারণে আমাদের নেতাকর্মীদের জনগণের দোড়গোড়ায় যেতে হবে। বৈঠকে দ্বাদশ নির্বাচনে কী কী উপায়ে শক্তি সঞ্চয় করা যায়, সেটি নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া দলের যেখানে সাংগঠনিক জটিলতা রয়েছে, সেগুলো সমাধানেরও দিক নির্দেশনা দেন দলীয় সভাপতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে দেশ পরিচালনা করেছেন, আমরাও সেইভাবেই দেশকে সাজাতে চাই। আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা বিগত দিনে দিয়ে আসছে, সেগুলো এক এক করে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এগুলোও জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। আমি ভবিষ্যতে কোনো নেতার বলয় দেখতে চাই না। সবাইকে মিলে মিশে কাজ করতে হবে। কেউ যদি সংগঠনবিরোধী কাজ করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার কাছে অনেক এমপির তথ্য আছে, নৌকা মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর আর এলাকায় যান না। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের বিষয়ে আমি আরও খোঁজ খবর নিচ্ছি। সেটি আগামী মনোয়নের ক্ষেত্রে দেখবো। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এক সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের ঘরে বসে না থেকে এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নেতারা কে কি করেন, সবার তথ্য আমার কাছে আছে। ফলে কেউ ছাড় পাবেন না। এখনও নির্বাচনের প্রায় এক বছর বাকি রয়েছে। তাই নির্বাচনে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দলটির একজন সাংগঠনকি সম্পাদক ও জাতীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি ডিজিটাল প্লাফরমে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। ফলে এখন আর বসে থাকার সুযোগ নেই। কোনোভাবেই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার লড়াই ধুলিস্যাত হয়ে যাবে। এদেশে আবার সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী জেকে বসবে। |