নিউজ ডেস্কঃ পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনাল ঘাটে যেখানে অন্তত চার বা পাঁচখানা লঞ্চ থাকার কথা। যাত্রী কোলাহল, ধাক্কাধাক্কি আর কুলিদের হাঁক ডাকে মুখরিত থাকবে পটুয়াখালী জেলার ব্যস্ততম টার্মিনাল ঘাট।
কিন্তু শহরের সিনেমা হলগুলোর মতো পল্টুন গুলোও যেনো নিরবে কাঁদছে। প্রতিটি শহরের চার পাঁচটি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যেমন ঐতিহ্যের সলতে হাতে একটি মাত্র হল কোথাও কোথাও টিকে আছে, তেমনি লঞ্চও নেমে এসেছে একটিতে। সিনেমাহলের কাউন্টার খোলার সাথেই যেমন শোনা যেতো টিকেট নেই, ঠিক তেমনি ছিলো লঞ্চের বুকিং অফিস গুলোও। ব্লাকারদের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কিংবা প্রভাবশালী কাউকে দিয়ে ফোন করিয়ে একটা কেবিন কোনোভাবে পেয়ে গেলে একজন যাত্রী নিজেকে ধন্য এবং খানিকটা ক্ষমতাধর মনে করতো, আর কৃতজ্ঞতায় কুর্নিশ করতো যার মাধ্যমে এই মহামূল্যবান কেবিনখানা লাভ করতো। কিন্তু সোমবার বিকেলে লঞ্চ ছাড়বার মাত্র ১ ঘন্টা পূর্বে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। ঘাটে ছিলো মাত্র ১টি লঞ্চ, এম. ভি কাজল-৭। টার্মিনাল ছিলো যাত্রীদের কোলাহলমুক্ত, ছুনছান নিরবতা। লঞ্চের ভিতরে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীর সংখ্যা নিতান্তই কম।
এম. ভি কাজল-৭ এর মাষ্টার মোঃ আবুল কালাম জানান, “এখন প্রতিদিন পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে ১টি লঞ্চ যাতায়াত করে। প্রতি রমজানের শুরুতে এরকম হয় তবে পদ্মাসেতু হওয়ার পূর্বে এই সময় ২/৩ টা লঞ্চ ছাড়তো। আর স্বাভাবিকভাবে ৪/৫ টি লঞ্চ ছাড়তো। কিন্তু পদ্মাসেতু হওয়ার পর যাত্রী অনেক কমে এসেছে। আর এখন এই সময়তো যাত্রী নেই বললেই চলে। একটা লঞ্চ ছাড়ে কিন্তু তাও প্রায় খালি যায়।”
সুন্দরবন লঞ্চের পটুয়াখালীর বুকিং ম্যানেজার মোঃ আবু জাফর মৃধা জানান, “পদ্মাসেতু হওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার যাত্রী প্রতিদিন লঞ্চে যাতায়াত করতো। লঞ্চ ছাড়তো প্রতিদিন ৪/৫ টা। কিন্তু সেতু হওয়ার পরে যাত্রী অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। আর এখন এই রমজানের শুরুতে মাত্র ২/৩শ যাত্রী যাতায়াত করে। লঞ্চ ছাড়ে মাত্র ১টি। তবে আসন্ন ঈদুল ফিতরের সময় এই অবস্থার অনেকটা পরিবর্তন হবে বলে আশা করি।”
যাত্রী পলাশ বলেন, আমি ঢাকায় চাকুরী করি। আমি একটু লঞ্চপ্রিয়। তাই লঞ্চে ঢাকা যাচ্ছি। কিন্তু আগের মত লঞ্চে আর কোলাহল নেই। যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালীর গলাচিপা, কোড়ালিয়া এবং বরগুনা জেলার বরগুনা ও আমতলী থেকে ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো এই রমজানের শুরুতে যাত্রীর অভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।