কুয়াকাটায় রাখাইনদের ৩ দিনব্যাপী জলকেলি উৎসব শুরু।।
মোয়াজ্জেম হোসেন
|
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। মাঠের মধ্যে রাখা হয়েছে একটি সাজানো গোছানো নৌকা। নৌকার মধ্যে রাখা হয়েছে পানি। আর এ পানি একে অপরের গায়ে মারছেন রাখাইন কিশোর কিশোরীরা। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাখাইনদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব। বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় এ উপলক্ষে কুয়াকাটা শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন রাখাইন মার্কেটে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব। এর আগে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তিনদিন ব্যাপী সাংগ্রাইন উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে পেরে রাখাইন পরিবারের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এসময় নাচে গানে মাতোয়ারা উঠে কিশোর কিশোরীরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.রবিউল ইসলাম, কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মোতালেব তালুকদার এবং কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার ও কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার,পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা প্রমূখ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উচান চিন মাতুব্বর।
রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ বলছেন, পুরোনো বছরের সব গ্লানি ও দুঃখ জলে মুছে নতুনভাবে জলে জলে পরিশুদ্ধির জন্য এই উৎসব। টানা ৩ দিন চলবে এই উৎসব।
জল কলিতে অংশ নেওয়া রাখাইন তরুণী অং মেয়ী জানান, জলকেলিতে অংশ নিতে আমাদের খুব ভালো লাগে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা একে অপরের গায়ে জল দিয়ে থাকি। রাখাইন তরুণ লু চিং বলেন, নতুন বর্ষকে বিদায় ও বরণের ওই হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসবের রীতি। এ উৎসব ঘিরে ৩ দিনব্যাপী জলকেলি ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে রান্না হচ্ছে নিজস্ব খাবার।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মোঃ আনোয়ার হাওলাদার বলেন, রাখাইনদের ৩ দিনের জলকেলি উৎসব সার্বিক সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা কাজ করছে এবং তিনি বলেন, ‘জলকেলি উৎসবটি রাখাইনদের হলেও এটি কালক্রমে এ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এ জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্যান্ডেল গুলোতে পুলিশ সদস্য ও গোয়েন্দারা অবস্থান করে।
কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান জানান, কুয়াকাটার রাখাইন সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব এরা যুগ যুগ ধরে পালন করে আসছে। তিনি আরো বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ আমাদের বাংলাদেশ। তাই এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণ এখানে উপস্থিত হয়েছে।
|