রাজশাহীতে ‘স্বপ্নের আম’ নিয়ে ‘স্বপ্নের ঘোরে ‘ জনতা!
ইসরাত জাহান কনিকাঃ- রাজশাহী
|
সময় নিউজ বিডিঃ কথিত ‘স্বপ্নে পাওয়া’ আম নিয়ে রাজশাহীর মোহনপুরের বসন্তপুরে ঘটে যাচ্ছে তুঘলকি কাণ্ড। ‘স্বপ্নযোগে’ দেখে অসময়ে বাড়ির সামনের গোরস্থানে গিয়ে পাওয়া পাকা এই আমটি নিয়ে যেন স্থানীয় জনতাওস রয়েছে স্বপ্নের ঘোরে। কীভাবে সম্ভব এটি? এমন প্রশ্নই যেন সবাইকে নাড়া দিচ্ছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এই আমটি উপজেলার বসন্তপুর এলাকার ফাতিমা বেগম (৩৯) নামের এক নারী স্বপ্নের মাধ্যমে পেয়েছেন। তিনি আমটি মসজিদে দান করেন। মসজিদ থেকে আমটি নিয়ে যায় স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিলে। সেই মাহফিল থেকে ওই এলাকার আব্দুর রাজ্জাক নিামে এক যুবক সাড়ে ৯ শত টাকায় আমটি বাড়িতে কিনে যায়। স্বপ্নে আম পাওয়ার বিষয়ে ফাহিমা বেগম জানান, ‘পরপর তিনদিন আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয় যে, আমার বাড়ির সামনের গোরস্থানে আমগাছের নিচে আম পড়ে আছে। স্বপ্ন দেখে তৃতীয় দিনের পর সেখানে যাই, একটি পড়ে থাকা আমও দেখতে পাই সেখানে। স্বপ্নের সাথে মিলে যাওয়ায় ভয় হচ্ছিল আমটি নিতে। ভয়ের কারণে আমটি না নিয়ে একবার ফিরে চলে আসি। কিন্তু অদৃশ্য গায়েবি আওয়াজ আসে আমটি নেওয়ার জন্য। গায়েবি আওয়াজের কারণে আমি সেখানে যেতে বাধ্য হই। খুব ভয়ে ভয়ে আমটি নিয়ে আসি এবং মসজিদে দান করে দেই।’ আমের ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মসজিদ কমিটি আমটি একটি ওয়াজ মাহফিলে নিয়ে আসে। অসময়ের আম ভেবে এবং আমটি বেশি দামে ক্রয় করলে মসজিদের উপকার হবে এটি ভেবেই আমটি ৯৫০ টাকায় ক্রয় করেছি। তবে স্বপ্নে পাওয়া আম এখবর আগে আমি জানতাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই স্বপ্নে দেখা অসময়ের আমটি নিয়ে বিপাকেও পড়েছি বেশ। এই আম দেখার জন্য আমার বাসায় দূর-দূরান্ত থেকে শতশত মানুষ আসছে। অনেকেই ফোন করে হয়রানি করছেন। এমনকি রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাও আমটি দেখার জন্য আমার বাসায় আসতে চেয়েছেন। তাই আমটি আমি ফ্রিজে রেখে দিয়েছি।’ এদিকে ‘স্বপ্নের আম’ দেখে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ওই এলাকার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বপ্নের আম’ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমিও কৌতুহলী হয়ে আমটি দেখতে গিয়েছিলাম। ‘স্বপ্নের’ আমটি দেখে আমিও যেন স্বপ্নের ঘোরে রয়ে গেছি। আসলে কিছুই বুঝতে পারছি না। মনে মনে শুধু প্রশ্ন করছি কীভাবে আসলো এই আম? শুধু মঞ্জুরুলই নন; হলুদ রঙের পাকা এই আমটি দেখতে গত ৩দিনে শত শত লোক আব্দুর রাজ্জাকের বাাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে। যেন আম ক্রয় করে অনেকটা বিপদে পড়েছেন রাজ্জাক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিএমএম বারি ডলার বলেন, ‘আমের মুকুলের এই সময়ে পাকা হলুদ আম। এই অসময়ে বাংলাদেশে কোনো আম হয় না। আর সেই রকম ব্যতিক্রম জাতের আমগাছও কিন্তু বাংলাদেশে নেই। ওই অসময়ের আমটি হয়তো বা বাইরের কোনো দেশের হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন ‘ যেহেতু স্থানীয়রা বলছেন আমটি অলৌকিকভাবে এসেছে। তাই অনেকটা কৌতূহলের জায়গা থেকেই আমটি দেখতে যাওয়া উচিত।’ বিষয়টি নিয়ে গবেষণাও প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। |