গরমে দিশেহারা মানুষ, নিম্নচাপে পায়রা বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত।।
মোয়াজ্জেম হোসেন পটুয়াখালী।
|
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ ভ্যাপসা গরমে দিশেহারা কলাপাড়ার নিম্ন আয়ের মানুষ। রাতে শীত, সকালে ঘন কুয়াশা, দিনে আবার ভ্যাপসা গরম। আবহাওয়ার এমন বিরুপ প্রভাবে অস্বস্থি নেমে এসেছে কলাপাড়া শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে। তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তবে আবহাওয়ার এই অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিনপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি অরো ঘনীভ‚ত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে। এটি রবিবার সকাল ৬টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৩৭৫ কিলোমিটার দক্ষিন-দক্ষিনপূর্বে অবস্থান করছিলো। এটি আর ঘনীভ‚ত হয়ে উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। তাই পায়রা বন্দরকে ০১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরা ট্রলার সমূহকে উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীতে গত দুইদিন পর্যন্ত মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল জেলায় সর্বোচ্চ ৩৮.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গত তিনদিন ধরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে গরম। আর এ গরমে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় রিক্সা চালক, অটো চালক ও ভ্যান চালকসহ দিনমজুরদের। এছাড়া অসহনীয় এ গরমে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সবার মাঝে লক্ষ্য করা গেছে বিরক্তির ছাপ। বাজারে আসা অনেক শ্রমজীবিকে লেুবর শরবতে তৃষ্ণা মেটাতে দেখা গেছে। তপ্ত রোদে মৌসুমী সবজী চাষিরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। জেলার সকল হাসপাতাগুলোতে বেড়েছে জ্বর ও চর্ম জনিত রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। এদিকে সূর্যের প্রখর তাপে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাও পড়েছেন বেকায়দায়। তারা বেশির ভাগ সময় পার করছেন হোটেলে।
পৌর শহরের শ্রমজীবি সাইফুল জানান, গত তিনদিন ধরে গরমে অতিষ্ট হয়ে গেছি। বদলা (দিন মজুর কাজ) দেয়া কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তাই ঘরেই বসে আছি। কলপাড়া টিয়াখালী ইউপির রিকশা চালক রবীন্দ্র সরকার জানান, রাতে বেশ শীত পরে, কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে হয়। ভোরে কুয়াশা, দিনে আবার অসহনীয় গরম। তীব্র গরমে আজ রিক্সা নিয়ে নামতে নাই। গতকাল রিক্সা চালিয়ে কিছুটি অসুস্থ হয়ে গেছি। লঞ্চঘাট এলাকার চা দোকানী পরান বাবু জানান, অসহ্য গরমে দোকানে বসে থাকা অনেকটা দায় হয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে খালি গায়েই বেচা কেনা করছি।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, পটুয়াখালীর উপর দিয়ে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা আরও বেশ কয়েকদনি বিরাজ করতে পারে। তবে বৃষ্টি হলে তাপ মাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
|