দেশের উন্নয়নে সবাই এক সাথে কাজ করলে দারিদ্র্য থাকবে না, শেখ হাসিনা।
|
সময় নিউজ বিডিঃ দুস্থ মানুষের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়নে সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে দারিদ্র্য থাকবে না। শনিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষকে সরকারের সচিবগণের গৃহ উপহার’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে তিনি একথা বলেন। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানে সরকারের ৮০ জন জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব নিজ নিজ এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে ১৬০টি গৃহহীন, ভূমিহীন পরিবারের কাছে তাদের জন্য নির্মিত ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা আমাদের বিত্তশালী, তারা যদি এভাবে তার নিজ নিজ এলাকায় কিছু দুস্থ পরিবারের দিকে ফিরে তাকায়, ঘর নাই তো ঘর করে দিল, তাদের কিছু কাজের ব্যবস্থা করে দিল, তাদেরকে সহযোগিতা করল…. “শুধু নিজে ভালো থাকবো, নিজে সুন্দর থাকব, নিজে আরাম-আয়েশে থাকব, আর আমার দেশের মানুষ, আমার এলাকার মানুষ তারা কষ্টে থাকবে, এটা তো মানবতা না।” সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা যেসব স্কুলে পড়াশোনা করেছেন, সেসব স্কুলগুলোর উন্নয়নের জন্য একটু কাজ করেন। আপনি যেই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন সেই গ্রামে যেই কয়টা মানুষকে পারেন, সহযোগিতা করেন। সবাই মিলে সম্মিলিত কাজ করলে পরে এদেশে দারিদ্র্য থাকবে না।” মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, সরকারের সেই ঘোষণা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসায় সচিবদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “জাতির পিতা সরকারি অফিসারদের এই কথাই বলেছিলেন যে আপনারা আজকে যা কিছু পান, তার মূলে কারা … এই গ্রামের মানুষগুলোই তো। মাথার ঘাম পায়ে ফেলেই তো এরা অর্থ উপার্জন করে। তাদের জন্য আপনারা কিছু করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। “আমি যদি একটু কিছু করে যেতে পারি মানুষের জন্য, এটাই আমার জীবনের স্বার্থকতা। কী পেলাম, না পেলাম, সেই চিন্তা আমি কখনও করি না।” বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর জীবন তুলে ধরার পাশাপাশি ১৯৭৫ সালে তাকে হত্যার পর নিজের নির্বাসিত জীবনের কথা তুলে ধরেন মেয়ে শেখ হাসিনা। “জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল, রাষ্ট্রদূত করেছিল। আর যারা যুদ্ধাপরাধী..পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনদেরকে তুলে নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে, লুটপাট করেছে তাদেরকেই মন্ত্রী বানিয়েছে, তাদেরকেই ক্ষমতায় বসিয়েছে।” জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে বাংলাদেশের হাঁটার কথাও বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শখ হাসিনা। “পরবর্তীতে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে মানুষের কল্যাণে কাজ শুরু করলে বাঙালি জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে শুরু করে।” প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ঘর নাই এমন ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি পরিবার এবং জমি আছে ঘর নাই এমন ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবারসহ সর্বমোট ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করেছে সরকার, যাদের ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১ হাজার কোটি টাকায় প্রায় ৬০ হাজার পরিবারকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/দপ্তর, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে সর্বমোট ৬ হাজার ২শ ২২টি গৃহ নির্মাণের জন্য প্রতিশ্রুত হয়েছেন। এর মধ্যে জনপ্রতিনিধি ২ হাজার ৮৩২ জন, মন্ত্রণালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৫৬২টি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগে ৮২৮টি।
|