কলাপাড়ায় পুলিশ প্রটেকশনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারনার অভিযোগ।।
মোয়াজ্জেম হোসেন কলাপাড়া।
|
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশ প্রটেকশনে নির্বাচনী প্রচারনার অভিযোগ উঠেছে। তৃনমূলের নির্বাচনী এলাকায় এভাবে পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে সাধারন ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়ায় উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েছেন ভোটাররা। তবে এনিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার ওসি পুলিশের টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে বললেও প্রার্থী বললেন দু’একদিন তাকে পুলিশ প্রটেকশনে প্রচারনা চালাতে হয়েছে। এছাড়া বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে মিছিল ও মোটর সাইকেল শোভাযাত্রায় আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ উঠেছে ঐ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার লতাচাপলি ও ধূলাসার ইউনিয়নের নৌকা, হাতপাখা ও একাধিক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশ কিছু অভিযোগ তথ্য প্রযুক্তি ও ফৌজদারী অপরাধ সম্পর্কিত থাকায় যা সংশ্লিষ্ট থানায় তদন্তের জন্য প্রেরন করা হয়েছে। এছাড়া ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধেও বেশ ক’টি আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ এসেছে। সবগুলো অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের বাড়ীতে আজ শুক্রবার বিকেলে পুলিশ টিম সহ কর্মকর্তাকে আপ্যায়ন ও প্রার্থীর সাথে গোপন সখ্যতার অভিযোগ তুলেছেন নৌকার সমর্থকরা। এছাড়া পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে প্রচারনা চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এর আগে ধূলাসার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বিতাকারী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো: মোদাচ্ছের হোসেন সিইসি কার্যালয়ে আ’লীগের দু’বহিস্কৃত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহরিয়ার সবুজ, মাহবুবুর রহমান এবং হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী হাফেজ আবদুর রহিম’র বিরুদ্ধে আচরন বিধি লংঘন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেছেন। যে আবেদনে নৌকা’র পোষ্টার দিনে দুপুরে ছিড়ে ফেলা, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন, শত শত মোটর সাইকেল শোভাযাত্রায় আতঙ্ক সৃষ্টি, প্রচারনার নির্দিষ্ট সময় পরও বিকট শব্দ যন্ত্রের একাধিক মাইক ব্যবহার, ধর্মীয় অনুভ‚তি কাজে লাগিয়ে প্রচারনা চালানোর অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে আ’লীগ থেকে বহিস্কৃত চশমা প্রতীকের স্বতন্দ্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, ’৯ নম্বর ওয়ার্ডে আমার প্রচারনায় বাঁধা দেয়ায় দু’একদিন পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে প্রচারনা চালাতে হয়েছে। আমার বাড়ীতে পুলিশের কোন টিম আজ আসেনি। একটু আগে ওসি সাহেবও আমার কাছে ফোনে জানতে চেয়েছেন।’
ইউপি নির্বাচনে দায়িত্বপালনরত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: আবুবক্কর সিদ্দিকী বলেন, ’শান্তি পূর্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ বিধিমালা ২০১৬ এর ৩১ ধারার বিধান লংঘনে কলাপাড়ার দু’ইউনিয়নে ১৫ জনকে ৬৩ হাজার টাকা দন্ড প্রদান করা হয়েছে।’
রিটার্নিং অফিসার আবদুর রশিদ জানান, শান্তিপূর্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসি বদ্ধ পরিকর। তাই আচরন বিধি লংঘনের দায়ে ইতোমধ্যে নৌকা প্রতীকের দু’প্রার্থী মো: আনছার মোল্লা, মো: মোদাচ্ছের হোসেন এবং হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো: মোসলেম মুসুল্লীকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু অভিযোগ তথ্য প্রযুক্তি ও ফৌজদারী অপরাধ সম্পর্কিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানায় তদন্তের জন্য প্রেরন করা হয়েছে। যা সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, কোন প্রার্থীকে পুলিশ প্রটেকশন দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীদের শান্তিপূর্ন প্রচারনা ও আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনে ৩টি ওয়ার্ড মিলে পুলিশের ১টি টহল টিম নিযুক্ত করা হয়েছে। যাতে একজন অফিসারের নেতৃত্বে রয়েছে ৪/৫ জন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য। যারা পালাক্রমে সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবে।
প্রসংগত, ১৫জুন ইভিএম পদ্ধতিতে কলাপাড়ার মেয়াদ উত্তীর্ন লতাচাপলি ও ধূলাসার ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে লতাচাপলিতে ১৭ হাজার ৭০৮ জন ভোটার এবং ধূলাসারে ১৪ হাজার ৩৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
|