সময় নিউজ বিডিঃ দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার সম্পাদক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক অংশের মামলায় ৫ আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত।
গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জাহিদ ওরফে সবুজ, নজু ওরফে রিপন, রিমন ওরফে আসাদুজ্জামান, সৈয়দ ইকবাল হোসেন ওরফে স্বাধীন ও মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর। রায় ঘোষণাকালে জাহিদ, নজু, রিমন ও স্বাধীনকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর আসামি মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছেন।এ মামলার একটি অংশ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক মোঃ আব্দুস সালাম সিকদার ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্র“য়ারি রায়ে চার্জশিটভুক্ত ৭ আসামিকে বেকসুর খালাস পায়।
বিচারক রায়ে তাঁর মন্তব্যে বলেন, কোনো সাক্ষীই হত্যাকান্ড সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দেননি। অনেক সাক্ষী সাক্ষ্য দেননি। আদালত থেকে সমন জারি করেও সাক্ষীদের আনা যায়নি। উপরন্তু তদন্তে যেসব বিষয় গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল এবং যাদের জিজ্ঞাসাবাদ বা সাক্ষী করা প্রয়োজন ছিল, তা করা হয়নি বলেও আদালত অভিমত দেন।একাধিক তদন্ত কর্মকর্তা বদল শেষে হত্যা মামলায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়। অভিযোগ পত্রভুক্তদের মধ্যে চারজন বিডিআর আলতাফ, রিপন আহমেদ ওরফে সোয়েব, সুমন ওরফে শরিফুজ্জামান ও শ্যামল ওরফে দিদার ক্রসফায়ারে মারা যাওয়ায় আদালত তাঁদের নাম বাদ দিয়ে সাতজনের নামে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন।আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মোঃ ছায়েদুল হক শাহীন নথীর বরাত দিয়ে জানান, ২০০৪ সালের ২৭ জুন নগরীর শান্তিধাম মোড়ে দৈনিক জন্মভূমি অফিসের সামনে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় সাংবাদিক বালু নিহত হন। হত্যাকান্ডের পরদিন খুলনা থানার তৎকালীন এসআই মারুফ আহমদ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক ধারায় দু’টি মামলা দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শেখ এনামুল হক হত্যা মামলার দুর্বল দিকগুলো উলেখ করে বিস্ফোরক মামলাটি আরো তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন জানান। ২০ এপ্রিল আদালতের তৎকালীন বিচারক মোহাম্মদ সেকান্দার আলী আবেদনটি শুনানি শেষে বিবেচনায় নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আদেশ দেন। বিস্ফোরক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোর অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল কাইয়ুম শিকদার সাত বছর ধরে তদন্ত করে আসামি করেন ৫ জনকে। ২০১৯ সালের ২২ মে জননিরাপত্তা বিঘœকারী দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি আরিফ মাহমুদ লিটন। আসামিপক্ষে ছিলেন এড. এস এম মঞ্জুর আহমেদ ও চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার।