বুয়েটে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, তদন্ত কমিটি গঠন
স্টাফ রিপোর্টার
|
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ কাজে অভিযুক্তকে উসকানিদানসহ সহায়তা করেছেন তারই তিন সহপাঠী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম জারিফ হোসাইন। তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর তাকে সহায়তা করছেন সালমান সায়ীদ, জারিফ ইকরাম ও জায়ীদ মনোয়ার চৌধুরী। ফেসবুক মেসেঞ্জারে ওই নারী শিক্ষার্থীকে অর্ধনগ্ন ছবি ও অশ্লীল ভিডিও পাঠিয়েছেন জারিফ হোসাইন। আপত্তিকর বিভিন্ন ইমোজি ব্যবহার এবং কমেন্টের মাধ্যমে নারী সহপাঠীকে যৌন হয়রানি করেছেন তিনি। আর সেসব অশ্লীল মেসেজ, ছবি, ভিডিওর স্ক্রিনশটগুলো তাদেরই আরেক সহপাঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে দিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রিনশটসহ ঘটনাটি রীতিমতো ভাইরাল। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চার অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ট্রল থেকে রেহাই পাচ্ছে না বুয়েটও। ওই চার শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তির আগে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন, সেসব প্রতিষ্ঠান নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে আছি। ফেসবুক ব্যবহারে অন্য কারও অনুভূতিতে যাতে আঘাত না লাগে, মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়, তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো বা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির বিবেচনায় বুয়েটের পক্ষ থেকে যৌন হয়রানির অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত শেষে ভুক্তভোগী বিচার পাবেন বলে আশ্বস্ত করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। স্ক্রিনশটগুলো থেকে যা জানা যায়, অভিযুক্ত জারিফ হোসাইন ভুক্তভোগী নারী সহপাঠীকে পছন্দ করতেন। তবে তিনি জারিফের আহ্বানে সাড়া না দিলে তিন বন্ধুর কাছে পরামর্শ চান। পরে তাদের উসকানি ও সহযোগিতায় জারিফ মেয়েটিকে যৌন হয়রানিমূলক মেসেজ পাঠাতে থাক। বিষয়টি পরিকল্পনার জন্য চার বন্ধু মিলে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলেন। সেখান থেকেই পরিকল্পনা করে মেয়েটিকে যৌন হয়রানি করা হয়। বুয়েটের নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর কথোপকথনের যে স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে আছে, তাতে দেখা যায়, নারী শিক্ষার্থী বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক পর্যায়ে। এরপরও একই আচরণ করতে থাকলে পুলিশে অভিযোগ জানাতে বাধ্য হবেন বলেও জানিয়েছেন। ওই অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার আচরণের জন্য ক্ষমা চাইলেও জারিফ থামেননি। |