সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ব্যবসায়ী আলমগীর হত্যা মামলায় লক্ষ্মীপুরে দু’জনের মৃত্যুদণ্ড
এস এম আওলাদ হোসেন
প্রকাশ: ৫ জুলাই, ২০২২, ৫:৩৬ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

ব্যবসায়ী আলমগীর হত্যা মামলায় লক্ষ্মীপুরে দু’জনের মৃত্যুদণ্ড

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সুপারি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন হত্যা মামলায় দুই আসামি মেহেদি হাসান রুবেল ও ফয়েজ আহম্মদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। মামলার অপর আসামি সিএনজি চালক মো. সাগর নিরাপরাধ হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছে আদালত।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আসামি রুবেল ও ফয়েজ টাকার জন্য পরিকল্পিতভাবে আলমগীরকে হত্যা করে। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগে প্রমাণিত হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ফয়েজ পলাতক রয়েছে। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেল ও খালাসপ্রাপ্ত সাগর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেল দত্তপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বটতলি গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও ফয়েজ একই এলাকার আবদুল্লাহর ছেলে। রুবেল ও ফয়েজ সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

আদালত সূত্র জানায়, ভিকটিম আলমগীর রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের মৃত বশির উল্যার ছেলে। রুবেলের সঙ্গে তার সুপারি ব্যবসা ছিল। ব্যবসায়ীক লেনদেনে রুবেলের কাছ থেকে তিনি ১৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা পাওনা হন। এদিকে রুবেল আইপিএল ক্রিকেটে জুয়া খেলে ৮ লাখ টাকা হারায়। টাকা হারিয়ে তিনি মানসিকভাবে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন। এরমধ্যে রুবেল ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট তার চাচা হারুনুর রশিদকে ৫ লাখ ও আলমগীরকে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রতি দেয়। কিন্তি রুবেল ৩ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে পারে। এতে রুবেল তার চাচাতো ভাই ফয়েজকে ডেকে বিষয়টি জানায়। তখন তারা আলমগীরের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরে ধরা পড়ার ভয়ে তারা হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০ আগস্ট আলমগীর টাকার জন্য ফোন দিলে রুবেল তাকে সদর উপজেলার মান্দারী বাজার একটি ফাস্টফুডের দোকানে আসতে বলে। এরআগেই ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে রুবেল ও ফয়েজ ফাস্টফুডে আসে। কিছুক্ষণ পরই আলমগীরও ওই দোকানে আসে। তখন ফয়েজকে ছোটভাই বলে তার সঙ্গে রুবেল পরিচয় করে দেয়। এসময় রুবেল তার ভাই ফয়েজকে তিনটি কোমল পানীয় আনতে বলে। তিনিটি মিরিন্ডা (কোমল পানিয়) নিয়ে একটি মধ্যে ফয়েজ ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় আলমগীরকে খেতে দেয়। মুখ খোলা মিরিন্ডা খেতে আলমগীর অনীহা প্রকাশ করলে সেখান থেকে রুবেলও একটু খায়। বাকিটা আলমগীর খেয়ে নেয়।

অন্যদিকে ৩ লাখ টাকা এনেছে বলে রুবেল বাকি টাকার জন্য আলমগীর ও ফয়েজকে নিয়ে সাগরের সিএনজি অটোরিকশাযোগে মিয়ারবেড়ি এলাকার উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। সেখানে না থেমে তারা ইলিশ মাছ কেনার জন্য কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের মেঘনা নদীর মতিরহাট এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এরমধ্যেই ঘুমের ওষুধের প্রভাবে আলমগীরে চোখে ঘুমের ভাব দেখা দেয়। মতিরহাট তাকে মারা হলে ধরা পড়ার ভয় রয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় সেখান থেকে তারা ইলিশ না কিনেই চলে আসে। সিএনজির পেছনে রুবেল ও ফয়েজের মাঝখানে তাকে বসানো হয়। পরে তারা সেখান থেকে বিভিন্ন সড়ক দিয়ে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনীতে আসে। এসময় আলমগীর নেমে যেতে চায়। তখন রুবেল বলে, আপনি অসুস্থ্য, আমরাই আপনাকে বাড়িতে নামিয়ে দেব। একথা বলে তাকে নিয়ে সদর উপজেলার দালার বাজার ইউনিয়নের মিলগেইট এলাকায় নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রথমে ধারালো ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে ফয়েজ। এসময় আলমগীরকে রুবেল ঝাপটে ধরে রাখে। একপর্যায়ে ফয়েজ তার পেটে উপর্যপুরি আঘাত করলে তিনি মারা যান। এতে সিএনজি চালক সাগর প্রতিবাদ করলে তাকেও হত্যার হুমকি দেয়। এ ভয়ে সে আর কিছু বলেনি। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাজির দিঘীরপাড় এলাকার একটি পুকুরে তার মরদেহ ফেলে দেয়। আর ৩ লাখ টাকা থেকে ফয়েজকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে রুবেল বাড়িতে চলে যায়। সিএনজি চালককে হুমকি দিয়ে যায় এ ঘটনায় কাউকে কিছু বললে তাকে হত্যা করবে। পরদিন আলমগীরের ভাসমান মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার ছোটভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করে। এ ঘটনায় সিএনজি চালক সাগরকে গ্রেপ্তার করলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ রুবেলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। ঘটনার পর থেকেই ফয়েজ পলাতক রয়েছে। ২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (নিঃ) জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি ও ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়।

মামলার বাদী হুমায়ুন কবির বলেন, আমি ভাই হারিয়েছি। বাবার মতো তিনি আমাদের আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু আসামিরা তাকে মেরে ফেলেছে। আমি এ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।

Share Button




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

This image has an empty alt attribute; its file name is add-1-1024x672.jpg

সর্বাধিক পঠিত

  • প্রধান উপদেষ্টাঃ শাহজাদা পারভেজ টিনু।
    আইন উপদেষ্টাঃ এ্যাড আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
    (জজকোর্ড ঢাকা)
    সম্পাদক ও প্রকাশক: এইচ এম মোহিবুল্লাহ (মোহিব)
    নির্বাহী সম্পাদকঃ মো: মোস্তাফিজুর রহমান।
    ব্যবস্থাপনা পরিচালক: নূর-ই আলম আজাদ।
    যুগ্ন সম্পাদকঃ আমিনুর রহমান রুবেল ও এস এম আমিনুল ইসলাম।
    সাহিত্য সম্পাদকঃ খলিলুর রহমান তাং ও ইউসুফ আলী তাং।
    বার্তা সম্পাদক : এস এম আওলাদ হোসেন।

অফিসঃ
ঢাকাঃ সুলতান টাওয়ার (৩য় তলা) টংঙ্গী বাজার, গাজিপুর, ঢাকা।
বরিশালঃ ৩৪৫ সিটি প্লাজা ৩য় তলা ,ফজলুল হক এভিনিউ বরিশাল।
কলাপাড়াঃ মমতা মার্কেট,বাদুড় তলী সূইজগেট,কলাপাড়া,পটুয়াখালী।
E-mail: somoynewskp@gmail.com
মোবাইলঃ 01721987722

Design & Developed by
  নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ৫ বাংলাদেশী আহত   নবনির্মিত এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী   লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হলেন সাদিক খান   আইওএম মহাপরিচালক ঢাকায় আসছেন আজ   বজ্রপাতে খাগড়াছড়িতে মা-ছেলের মৃত্যু   আবারও বাংলাদেশে ঢুকল বিজিপির অন্তত ৪০ সদস্য   চন্দ্রগঞ্জে ট্রাক সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত -৩   দুর্যোগ মন্ত্রনালয় বিশ্বে এখন রোল মডেল।…দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রী মহিববুর রহমান/   ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধস : নিহত ১৫   পুলিশের মধ্যস্থতায় সমঝোতা: বনানীর সড়ক ছাড়লেন শ্রমিকরা   মুন্সীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনা: একই পরিবারের ৩ জন নিহত   ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে   নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে কানাডায় ৩ ভারতীয় গ্রেপ্তার   বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ   রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার   সড়ক দুর্ঘটনায় মুন্সিগঞ্জে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু   পটুয়াখালীতে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম দিবস পালিত ৷   কলাপাড়ায় প্রতিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পথচারীদের মাঝে বিনামূল্যে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ।   কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে মৃত ইরাবতী ডলফিন   দীর্ঘদিন অসুস্থতায় নিঃস্ব পরিবার, বাঁচতে চায় মহিপুরের জাকির সিকদার।