রাজশাহীর সরাংপুর মহল্লাকে ভোগাচ্ছে বালু।
ইসরাত জাহান কনিকাঃ- রাজশাহী
|
সময় নিউজ বিডিঃ অবাধ বালু পরিবহনের ফলে বালুতে সয়লাব রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার সরাংপুর মহল্লা। এতে নানা সংকটে পড়েছেন পৌরবাসী। এলাকাবাসীর বাধায় সাময়িক বন্ধ রয়েছে বালু তোলা। তবে স্থায়ীভাবে বালু মহলটি বন্ধ চান এলাকাবাসী। এনিয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর অভিযোগ দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, পদ্মা তীরবর্তী এই এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের বাস। পৌরসভার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাও এটি। উত্তর-দক্ষিণমুখো সড়কের দুই পাশে ছোট ছোট কাঁচা ও আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন স্থানীয়রা। হাটপাড়া নামের মহল্লার এই অংশে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। সেখানে রয়েছে দুই শতাধিক দোকানও। ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারাও হাটে কৃষিপণ্য বেচাকেনা করেন। এই এলাকাটির উত্তর প্রান্ত দিয়ে ভাঙাচোরা সরু রাস্তা পূর্বমুখী হয়ে গিয়ে মিলিত হয়েছে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে। আরেকটি রাস্তা থানার মোড় হয়ে মহাসড়কের ডাইংপাড়ায় গিয়ে যুক্ত হয়েছে। এইসব সড়ক পৌরবাসীর চলাচলে হালকা যানবাহন চলাচলের উপযোগী। তবে কোনোভাবেই ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। গত কয়েক বছর ধরে গোদাগাড়ীর ভাটোপাড়া, উজানপাড়া, মাদারপুর, বারুইপাড়া, ও কেল্লাবারুইপাড়ার ৭৩ একর এলাকাজুড়ে বালুমহল ইজারা দিয়ে আসছে জেলা প্রশাসন। উপজেলার ছয় মৌজার এই বালুমহলটির সরকারি ইজারামূল্য ৫৫ লাখ টাকা। চলতি মৌসুমে জাহাঙ্গীর অ্যান্ড সন্স বালুমহলটি ইজারা নিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক মানচিত্র অনুযায়ী, উল্লেখিত এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মানদীর অবস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের আলাতুলি ইউনিয়নে। ইজারাদার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নদী সীমানা থেকে বালু কেটে নৌকায় তুলে এনে ওই জেলার সীমানার ঘাটে স্তুপ করছে। পরে শত শত ডাম্পার ও ট্রাকে করে প্রতিদিন বালু বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সরাংপুরের ঘনসতিপূর্ণ এলাকা দিয়ে। এতে এলাকার বাতিঘরগুলো দেবে যাচ্ছে। রাতদিন ভারী যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলে নষ্ট হচ্ছে সড়কগুলো। নষ্ট হচ্ছে পৌর অবকাঠামো। রাস্তায় ব্যাহত হচ্ছে জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল। ধুলা-বালিতে ঢাকা পড়ছে পুরো এলাকা। রোগবালাই বাড়ছে বাসিন্দাদের। তাছাড়া নদীর পাড়ও ভেঙে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় বালুমহলটির ইজারা বাতিল দাবি করেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম। তিনি বলেন, ‘বালুমহল ইজারা, চালু কিংবা বাতিল পুরো বিষয়টি জেলা প্রশাসনের। তিনি বিষয়টি জেলা প্রশানকে জানাবেন। সেখান থেকেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে তেমন করার কিছুই নেই।’ |