নিউজ ডেস্কঃ বরিশালে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা। গত ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া বাজার সংলগ্ন জিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে কিছু শিক্ষার্থী ও স্থানিয় একটি কুচক্রী মহল। পরে পুলিশ এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে আধাঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে যায়।
ঘটনার প্রথম থেকেই অভিযোগ ছিল বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদ নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রধান শিক্ষকে ফাঁসাতে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। প্রধান শিক্ষককে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও বহিরাগত লোকজন নিয়ে ঝাড়ু ও জুতা হাতে মিছিলে নামে। এতে জনগনের মনে নানান প্রশ্ন দেখা দেয়।
এই ঘটনায় ৬ আগস্ট (শনিবার) বোয়ালিয়া জিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তদন্তে আসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চল মোঃ আনোয়ার হোসেন,জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকমল হোসেন সহ ৪ জনের একটি টিম।
এসময়ে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস সাংবাদিকদের প্রশ্নে জানান, লিখিত প্রতিবেদন আমার হাতে এখনো আসেনি তবে থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে তানজিলা নামের যে ছাত্রীর সাক্ষীর নাম রয়েছে তার সাথে আমরা সবাই কথা বলেছি। তানজিলা আমাদেরকে বলেছে অষ্টম শ্রেণির অভিযোগকারীনি সে আর আমি এক সাথেই প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমে গিয়েছিলাম মধ্যাহ্ন বিরতির পরে ছুটি নেয়ার জন্য। আবার এক সাথেই বের হয়েছি। এর মধ্যে শ্লীলতাহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরো জানান, বিদ্যালয়ে আয়ার সাথে কথা বলেছি। প্রধান শিক্ষকের রুমে কেউ যেতে হলে আয়ার অনুমতি নিয়েই যেতে হয়। যদি প্রয়োজনে কোনো ছাত্র ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করতে আসেন, তাদের সাথে আয়া প্রধান শিক্ষকের রুমে প্রবেশ করেন। শ্লীলতাহানির কোনো ঘটনা আয়া দেখতে পায়নি। তবে থানায় অভিযোগ হয়েছে সেটা পুলিশ তদন্তে রয়েছে। অপরদিকে ৬ আগস্ট বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ৭ম,৮ম ও ৯ ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের সাথে সাংবাদিকদের কথা হলে শিক্ষার্থীরা জানান, এলাকার বড় ভাইরা আমাদের ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী স্যার এর বিরুদ্ধে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করিয়েছে। অনেক ছাত্র ছাত্রীরা বাড়ি চলে গেছে সবাই বিক্ষোভে অংশ নেয়নি। আমরা ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার জানতে পারি বিক্ষোভের কারন। আমাদের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী স্যারকে কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে দেখিনি।
তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আশুতোষ ব্রহ্ম প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, স্থানীয় একটি পক্ষ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে না পেরে প্রধান শিক্ষককে অপসারণের জন্য পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি সাজিয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সত্য রঞ্জন খাসকেল জানান, বোয়ালিয়া জিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান এখন পর্যন্ত শ্লীলতাহানি ঘটনার কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি। পুরো তদন্তের পরে জানা যাবে আসল রহস্য।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৯