ব্যবসায়ীকে অপহরণ: কক্সবাজারে ডিবির ৭ সদস্যের ৭ বছরের কারাদণ্ড।
কায়সার হামিদ মানিক,কক্সবাজার প্রতিনিধি।
|
নিউজ ডেস্কঃ কক্সবাজারের টেকনাফে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন কর্মরত বহিস্কৃত ৭ সদস্যকে দুই ধারায় ৭ ও ৫ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজম। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণাকালে সব আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কক্সবাজারের আইনজীবি দিদারুল মোস্তফা জানান, ৭ ডিবি পুলিশ সদস্য মিলে টেকনাফের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও ১৭ লক্ষ টাকা মুক্তিপন আদায়ের মামলায় দন্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় প্রত্যেককে ৫ বছর করে কারাদন্ড ও ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহরের থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাঁর স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দেনদরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার। টাকা পৌঁছে দেওয়া হলে পরদিন ভোররাতে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকির কর্মকর্তাকে জানান। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সেনাবাহিনীর এই নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করা হয়েছিল। মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাসে মেরিন ড্রাইভ সড়কে চৌকির সেনাসদস্যরা মাইক্রোবাস তল্লাশি করে তাতে ১৭ লাখ টাকা পান। এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনাসদস্যরা। পিপি ফরিদুল আলম জানান, মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ মঙ্গলবার রায় দিলো। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। বাদি ব্যবসায়ী আবদুল গফুরের ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় মামলা দায়ের করায় আমাদের পরিবারকে ব্যাপকভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আসামীরা তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশের সাথে যোগসাজস করে বিভিন্ন মিথ্যা মামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করেছে। এসব নির্যাতনে বাদি আবদূর গফুর মানসিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সে কারনে তিনি আদালতে পর্যন্ত আসতে পারেননি। উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর গ্রেপ্তারের পর ডিবির সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি ডিবির সাত পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশও করে। বিভাগীয় মামলার কার্যক্রমটি এখনো চলমান রয়েছে। |