পুনরায় নির্বাচনের দাবি: শেরপুর পৌরসভার
|
সময় নিউজ বিডিঃ শেরপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে গায়েবি ভোট পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রতিদ্বন্দ্বি তিন প্রার্থী। সেই সঙ্গে তারা ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান।সোমবার সকাল ১০টার দিকে শেরপুর প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী বিদ্যুৎ কুণ্ডু। এসময় কাউন্সিলর প্রার্থী তাপস মালাকার ও নাজমুল হক লুলুসহ তাদের কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ কুণ্ডু বলেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে আট নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই ওয়ার্ডে মোট নারী-পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ হাজার ১১৫ জন। এর মধ্যে নির্বাচনের দিন শনিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৬৫৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। খাতা-কলমে সেটিই লিপিবদ্ধ আছে।
এর মধ্যে সোমেন্দ্র নাথ ঠাকুর শ্যাম পানির বোতল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৮৬ ভোট। বিদ্যুৎ কুণ্ডু উটপাখি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৮ ভোট, তাপস মালাকার পাঞ্জাবি প্রতীক নিয়ে ৪২ ভোট ও নাজমুল লুলু ডালিম প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২১৫ ভোট। বাতিল ভোটের সংখ্যা ৪২টি। মোট প্রদত্ত ভোট ১৬৫৩টি। কিন্তু ঘোষিত ভোটের ফলাফল ও ব্যালটের সঙ্গে কোনো মিল নেই। এমনকি গণনায় প্রাপ্ত ভোটের ব্যালট পাওয়া যায় ১৬৭৩টি। অর্থাৎ অতিরিক্ত থাকে আরও ২০ ব্যালট। বিষয়টি জানতে চাইলে এই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস কোনো সদুত্তর দেননি। বরং প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের কোনো অভিযোগ ও কথা না শুনে ফলাফল নয়ছয় করে।
এরপর মাত্র ৫ ভোট বেশি দেখিয়ে কাউন্সিলর পদে পানির বোতল প্রতীকের প্রার্থী সোমেন্দ্র নাথ ঠাকুর শ্যামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে তাদের স্বাক্ষর ছাড়াই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তড়িঘড়ি করে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করে বলে অভিযোগ করেন পরাজিত প্রার্থী বিদ্যুৎ কুণ্ডু। তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে জেতানোর দায়িত্ব নেন। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন চলাকালীন বেশকিছু ফাঁকা ব্যালট দেন। সেসব ব্যালটে বাইরে সীল মেরে কৌশলে বাক্সে ঢুকানো হয়। তাই ভোটারের চেয়ে প্রাপ্ত ভোট ও ব্যালট বেশি হয়েছে। কিন্তু হিসাব মেলাতে না পারা এবং ফলাফল গড়মিল হওয়ার কারণেই বিষয়টি ধরা পড়েছে। শান্তিপূর্ণ এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ ঘটনায় জড়িতদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান তিনি। সেইসঙ্গে পৌরসভার এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জাল-জালিয়াতির নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখান করে অচিরেই নতুন তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে পুনরায় ভোট দেওয়ার দাবি জানান। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, আমরাও বুঝতে পারছি না অতিরিক্ত ব্যালট কিভাবে এলো। তবে একাধিকবার ভোট গণনা করে কাউন্সিলর প্রার্থী বিদ্যুৎ কুণ্ডুর উটপাখি মার্কার বান্ডিলে বেশকিছু জাল ব্যালট পাওয়া যায়। পরে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে সেসব বাতিল করা হয়। এতে করে একটু গরমিল হতে পারে। এছাড়া তিনি কোনো অনিয়মের মধ্যে নেই বলে দাবি করেন। |